অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এবারে কাশ ফুলের পাশাপাশি পদ্মের পাপড়ির রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের অধিকাংশ জলাশয়। অন্যান্য বছরের তুলনায় এই জেলায় এবার পদ্মের ব্যাপক চাষ হয়েছে। পদ্ম চাষ করে এবছরে মুখে হাসি ফুটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের পদ্ম চাষিদের। বিগত বেশ কয়েক বছর বন্যা অথবা আবহাওয়া বিরূপ হওয়ায় পদ্মচাষে খুবই ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে চাষিদের।
যে কারণে দুর্গা পুজোয় চাহিদার কথা মাথায় রেখে বাইরের জেলা থেকে পদ্ম এনে যোগান দিতে হতো ফুল ব্যবসায়ীদের। কিন্তু এবছর বন্যা না হওয়ায় ব্যাপকভাবে পদ্ম ফুটেছে বালুরঘাট হিলি ও তপন সহ বিভিন্ন এলাকার পুকুর দীঘি ও জলাশয়গুলিতে। দুর্গা পুজোর হাতে আর বেশি দিন না থাকায় এখন থেকেই তা সংরক্ষণে নেমে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
দুর্গা পুজোয় বিশেষ করে নবমীর দিন ১০৮ টি পদ্মফুল আবশ্যিক। যে কারণে মনসাপুজো, লক্ষ্মীপুজোর চাইতেও বেশি দুর্গা পুজোয় চাহিদা বেড়ে যায় ভারতের জাতীয় এই ফুলের। চাহিদার তুলনায় অন্যান্য বছর যোগান কম থাকায় পুজোর কটাদিন পদ্মের হাহাকার দেখা দিতো বাজারে। কিন্তু এবারে চিত্রটা একটু অন্যরকমের। বালুরঘাট ও তার আশপাশের কমলাশয় গুলি পদ্মফুল ও পদ্মপাতায় ভরে উঠেছে। স্বাভাবিক ভাবেই পদ্মচাষী ও ফুল ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে। শুধু তাইই নয় পদ্মচাষে আগ্রহ বেড়েছে পুকুর মালিকদের মধ্যেও।
বালুরঘাটের জঙ্গলপুর এলাকার পুকুর মালিক সূর্য মাহাতো জানিয়েছেন এবারই তিনি প্রথম পদ্মের চাষ করেছে। আবহাওয়া ভাল থাকায় অল্পদিনেই গোটা পুকুর জুড়ে পদ্মপাতার ঝাড় হয়ে গিয়েছে। মনসা পুজোর আগে থেকেই পদ্মফুলও ফুটেছে প্রচুর। এখনই শহর থেকে ব্যবসায়ী ও দুর্গা পূজা আয়োজকরা এসে অর্ডার দিয়ে যেতে শুরু করেছেন।
এদিকে বালুরঘাটের বিশিষ্ঠ ফুল ব্যবসায়ী রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানিয়েছেন যে অন্যান্য বছরে বন্যার কারণে জেলায় পদ্মচাষ না হওয়ায় মেদিনীপুর থেকে চড়া দামে পদ্মফুল কিনে এনে সরবরাহ করতে হয়েছিল। কিন্তু এবছর আবহাওয়া খুবই ভাল হওয়ায় ব্যাপক হারে পদ্ম ফুটেছে। এবারে দুর্গা পূজায় চাহিদা মত পদ্মের যোগান দিতে কোন সমস্যা হবে না বলে তিনি মনে করেন।