ওয়াকফ বোর্ডকেও দেওয়া ১২৩ টি কংগ্রেসী উপহার মোদি সরকার ফিরিয়ে নিল।

১৭ই ফেব্রুয়ারী‚ শুক্রবার কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগর বিষয়ক মন্ত্রক দিল্লিতে ১২৩ টি সম্পত্তির বিষয়ে নোটিশ দিয়েছে। সেগুলিকে আর দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি হিসাবে বিবেচনা করা হবে না৷ উল্লিখিত সম্পত্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে অনেকগুলো মসজিদ, দরগাহ এবং একটি কবরস্থান। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার এই সম্পত্তিগুলি দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডকে উপহার দিয়েছিল। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এই সম্পত্তিগুলির বিশিষ্ট স্থানগুলি সম্পর্কে আপত্তি তোলে এবং আদালতের দ্বারস্থ হয়।

একটি ১ সদস্যের কমিটি এবং দিল্লি হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ও একজন অবসরপ্রাপ্ত এসডিএম কে নিয়ে একটি ২ -সদস্যের কমিটি নিয়ে মোট ২ টি কমিটি তৈরী করা হয়েছিল।

২ সদস্যের কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে যে দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডকে তার মামলা উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা করা হয়নি। ফলে এই সম্পত্তি সম্পর্কিত মামলা থেকে বোর্ডকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছিল। কমিটি উল্লিখিত ১২টি সম্পত্তির সরাসরি পরিদর্শনেরও সুপারিশ করেছে।

অন্যদিকে আম আদমি পার্টির নেতা আমানতুল্লাহ খান ওয়াকফ বোর্ডের সমর্থনে দাঁড়িয়েছে। আমানতুল্লাহ টুইট করে জানিয়েছে যে‚ “আমরা ইতিমধ্যেই ১২৩ টি ওয়াকফ সম্পত্তির বিষয়ে আদালতে আমাদের আওয়াজ তুলেছি, আমাদের রিট পিটিশন নং 1961/2022 হাইকোর্টে বিচারাধীন।” আমানতুল্লাহ আরও জানিয়েছে যে‚ “আমরা ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তিতে কোনও ধরণের দখলের অনুমতি দেব না।”

দিল্লি ওয়াকফ বোর্ড আবাসন ও নগর বিষয়ক মন্ত্রকের কাছে একটি অফিসিয়াল চিঠি লিখেছে এবং এই ২ সদস্যের কমিটি গঠনকে চ্যালেঞ্জ করেছে।

২০১৪ সালে তৎকালীন কংগ্রেসী কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৩ সালের Land Acquisition, Rehabilitation and Resettlement Act এর বলে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ এবং স্বচ্ছতার অধিকারের অধীনে ১২৩ টি সম্পত্তিকে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া থেকে ডিনোটিফাই করার জন্য তার ক্ষমতা ব্যবহার করেছে। উল্লিখিত সম্পত্তিগুলি দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল।

সরকারী বিজ্ঞপ্তিটি পরবর্তীতে ইন্দ্রপ্রস্থ বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দ্বারা চ্যালেঞ্জ করা হয়। একই বছরে, দিল্লির একটি আদালত কেন্দ্রকে স্টেকহোল্ডারদের অভিযোগ শুনতে এবং সিদ্ধান্ত নিতে আদেশ দেয়।

দুই বছর পরে ২০১৬ সালে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এক সদস্যের কমিটি গঠন করে। ২০১৭ সালে, এক সদস্যের কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। দিল্লি হাইকোর্ট এই বছরের ১০ই ফেব্রুয়ারি বলে যে কাবরিস্তান কাদিমকে ২০১৭ সালে ITBP-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল।

তারপর ২০১৮ এর আগস্টে কেন্দ্র ১২৩টি সম্পত্তির ভাগ্য নির্ধারণের জন্য একটি ২ সদস্যের কমিটি গঠন করে।

২০২১ সালের নভেম্বরে, দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (DDA) দ্বারা একটি পাবলিক নোটিশ জারি করা হয়েছিল বিতর্কিত সম্পত্তিগুলির বিষয়ে জনমত আহ্বান করে।

অবশেষে 2022 সালের মার্চ মাসে, দিল্লি হাইকোর্ট দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডকে আর কোনো সুযোগ দিতে অস্বীকার করে।

আর এবার ওয়াকফ বোর্ডকে দেওয়া কংগ্রেসী মন্ত্রীসভার উপহার অবশেষে ফেরত নিয়ে নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।

সৌভিক দত্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.