নেপালকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান

একসময় পৃথিবীর একমাত্র হিন্দু রাষ্ট্র ছিলো নেপাল। কিন্ত চীনের চক্রান্ত আর তৎকালীন ভারত সরকারের অপদার্থতার জন্যে নেপাল বর্তমানে শুধু একটা সেকুলার রাষ্ট্রেই পরিণত হয়নি বরং উপমহাদেশে জেহাদী কার্যক্রমের এক অন্যতম বড় ঘাঁটিতেও পরিণত হয়েছে। এবং দেশটা সম্পূর্ণরুপে ডুবে গেছে দারিদ্র্য ও নৈরাজ্যের মধ্যে।

এমতাবস্থাতেই নেপালে আবার দাবি উঠেছে হিন্দু রাষ্ট্র হিসাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য। এবং উল্লেখযোগ্যভাবে নেপালের প্রাক্তন রাজাও এমন এক দাবিযুক্ত প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল (প্রচন্ড) এর নেতৃত্বাধীন নেপাল সরকার মাওবাদী যুদ্ধের ২৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে সোমবার একটি সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছিল। আর সেই দিনেই নেপালি জনগণ হিন্দু রাষ্ট্রের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এই প্রচারটি শুরু হয়।

প্রাক্তন রাজা এবং হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা প্রস্তাবিত দেশব্যাপী প্রচারাভিযান চিহ্নিত করতে প্রদীপ প্রজ্জলন করেন।

এই প্রথম এই দিনটাকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। ফলে দেশজুড়ে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষুব্ধদের মধ্যে ক্ষমতাসীন জোটের কিছু অংশ ছিল, যারা দশকব্যাপী বিদ্রোহকে “জনতার যুদ্ধ” হিসাবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছিল।

প্রাক্তন রাজা এইদিন ” ধর্ম, জাতি, জাতীয়তাবাদ, সংস্কৃতি এবং নাগরিকদের মেগা ক্যাম্পেইনকে রক্ষা পাক।” ক্যাম্পেইনের ধ্বজোত্তলোন করেন। পূর্ব নেপালের ঝাপা জেলার কাকারভিট্টা থেকে আসা একটি বিশাল জনতা তাকে অভ্যর্থনা জানায়।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি অলির নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল-ইউনিফাইড মার্ক্সবাদী লেনিনবাদী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দুর্গা প্রসাই এই প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। সমন্বয় করছেন।

প্রাক্তন রাজা এই সমাবেশে কোনও বক্তৃতা দেননি তবে এই জাতীয় প্রচারে তাঁর উপস্থিতিকে যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। কমিউনিস্ট নেতা দুর্গা প্রসাই বলেন যে‚ :নেপালের বর্তমান পরিস্থিতি মানুষের জন্য “শ্বাসরোধকারী” হয়ে উঠেছে।:

যদিও দুর্গা প্রসাই সরাসরি রাজতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেননি। কিন্তু তিনি বর্তমান পরিস্থিতিকে রাজার সময়ে তুলনায় চরম নিকৃষ্ট বলে দাবি করেন। তিনি বলেছিলেন, ” আমরা কখনোই এমন একটি প্রজাতন্ত্র হতে চাইনি যা মিলিয়নের বেশি নেপালি যুবককে তাদের রক্ত ​​ও ঘাম ঝরানোর জন্য উপসাগরীয় দেশগুলিতে পাঠাবে।”

যদিও তিনি সরাসরি রাজতন্ত্র ফিরে আসার আহ্বান জানাননি, তবে তিনি বলেছিলেন, “আমরা কখনই চাইনি, এবং আমরা এমন একটি প্রজাতন্ত্র হতে পারব না যা ১০ মিলিয়নের বেশি নেপালি যুবককে তাদের রক্ত ​​ও ঘাম ঝরানোর জন্য উপসাগরীয় দেশগুলিতে পাঠাবে। আমরা কখনোই এমনটা চাইনি।”

নেপালের কৃষকদের দুর্দশার কথা উল্লেখ করে তিনি সমবায় ব্যাঙ্ক এবং ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলি থেকে কৃষকদের নেওয়া ঋণ মুকুব করার দাবি জানান।.

এছাড়াও রাজপরিবারের অন্যান্যরাও এই সমাবেশে অংশ নিয়েছিল। প্রাক্তন রাজার ছেলে পারস, মেয়ে প্রেরণা এবং ভাইখি সীতাস্মা তাঁর সাথে যোগ দেন।

©সৌভিক দত্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.