‘যা করছি, সবটাই বিশ্বভারতীর স্বার্থে’। জমি বিতর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। জি ২৪ ঘণ্টার ‘আপনার রায়’ অনুষ্ঠানে তিনি বললেন, ‘অধ্যাপক সেনকে আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু দিল্লির সঙ্গে যুক্ত করছেন, এটা ওই মশা মারতে কামান দাগা হচ্ছে’।
জমি কার? বিশ্বভারতীর সঙ্গে অমর্ত্য সেনের সংঘাত চরমে। স্রেফ মিউটেশনের আবেদন নয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চাইতে বলে আইনি চিঠি পাঠিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। জি ২৪ ঘণ্টা-কে একান্ত সাক্ষাৎকারে তাঁর বিস্ফোরক মন্তব্য, ‘দিল্লিতে যে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক শাসন চলছে, সেটাকে কি আমি ভারতবর্ষের প্রতি মঙ্গলময় বলে মনে করি? আমি মনে করি না। সেকারণেই আমাকে আক্রমণ করা হচ্ছে, এটা বলার মতো বুকে পাটা নেই’।
বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘বিশ্বভারতীর উপাচার্য হিসেবে আমার নৈতিক দায়িত্ব আছে। আমার কাজের ক্ষেত্রে দিল্লির কোনও হস্তক্ষেপ নেই। যা করছি, সবটাই বিশ্বভারতীর স্বার্থে’। তাঁর আরও বক্তব্য, ‘অনেক ক্ষেত্রে অপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। তার সঙ্গে বাইরের কোনও শক্তির কোনও যোগাযোগ নেই। এই যে কথাটা অধ্যাপক সেন বলছেন, তাঁর স্তাবকরাও একই কথা বলছেন। তাঁরা পুরো ঘটনাটা জানেন না। অথবা সরকার বা অধ্যাপক সেনের কাছ থেকে সুবিধা পাওয়ার জন্য মিথ্যাচার করছেন। অধ্যাপক সেনকে অপমান করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই’।
২০১৯ সালে বিশ্বভারতীতে উপাচার্য হিসেবে যোগ দেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তিনি জানান, ‘সর্বসাকুল্যে বিশ্বভারতীর জমি ১ হাজার ১৩৪ একর। যখন উপাচার্য হিসেবে যোগ দিলাম, তখন দেখলাম, ৭৭ একর জমি কব্জা হয়ে গিয়েছে। তাঁরা বাঙালি সমাজের রুই-কাতলা। সবার কাছেই চিঠি দিয়েছি। অধ্যাপক সেনের মতো মানুষ যে কথাগুলি বলছেন, সে কথার কোনও তথ্য ভিত্তি নেই’।
এদিকে শান্তিনিকেতনের বাড়িতে গিয়ে অর্মত্য সেনের হাতে জমির মাপজোক সংক্রান্ত নথি তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বলেন, ‘উনি বাদী পক্ষের বক্তব্য শুনে বললেন জমিটা আমাদের। বিবাদি পক্ষের বক্তব্য শুনলেন না কিন্তু। আমার সঙ্গে কথা না বলে অধ্যাপক সেনকে কাগজ দেখালেন। যেটা ১৯৪৩ সালের কাগজ। ওই কাগজের কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই’। সঙ্গে বার্তা, অমর্ত্য সেনকে যাঁরা সমর্থন করছেন, তাঁদের আসতে অনুরোধ করছি। আমাদের সঙ্গে ঘুরে দেখুন। তারপর তাঁরা যদি বলেন, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী উপাচার্য হিসেবে অনৈতিক কাজ করছেন, তাহলে মাথা পেতে নেব’।