ব্রিটিশরা ভারতে রেলপথ নিয়ে আসে। ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, ভারতীয় রেলওয়ে ভারত সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি পাবলিক রেলওয়ে পরিষেবা হয়ে ওঠে। আজ এটি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রেল পরিষেবা। শুধু তাই নয়, ১২ লক্ষ কর্মচারী নিয়ে ভারতীয় রেল বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম বাণিজ্যিক সংস্থা।
আজ আমরা আপনাকে ভারতীয় রেলের সঙ্গে সম্পর্কিত এমন একটি তথ্য জানাতে যাচ্ছি, যা আপনি প্রথম শুনে বিশ্বাস করবেন না। আজও দেশে এমন একটি রেলপথ রয়েছে যা এখনও ব্রিটিশদের দখলে রয়েছে। এই ট্র্যাকটি শকুন্তলা রেলওয়ে ট্র্যাক নামে পরিচিত। মহারাষ্ট্রের অমরাবতী থেকে মুর্তজাপুর পর্যন্ত এই ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৯০ কিলোমিটার।
ট্র্যাকটি কখন এবং কেন নির্মিত হয়েছিল
মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতে তুলা চাষ করা হতো। এখানকার তুলা মুম্বই বন্দরে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই ট্র্যাক করা হয়েছিল। ব্রিটেনের ক্লিক নিক্সন অ্যান্ড কোম্পানি এই রেলপথ নির্মাণের জন্য সেন্ট্রাল প্রভিন্স রেলওয়ে কোম্পানি (CPRC) প্রতিষ্ঠা করে। এই ট্র্যাকের নির্মাণ কাজ ১৯০৩ সালে শুরু হয়েছিল, যা ১৯১৬ সালে শেষ হয়েছিল।
ট্র্যাকে চলত যাত্রীবাহী ট্রেন
এই ট্র্যাকে শুধুমাত্র একটি ট্রেন চলত যা শকুন্তলা প্যাসেঞ্জার নামে পরিচিত ছিল। এই কারণে এই রেল লাইনটি শকুন্তলা রেলওয়ে ট্র্যাক নামে বিখ্যাত হয়ে ওঠে। ১৯৯৪ সালের পর এই ট্রেনে বাষ্পের পরিবর্তে ডিজেল ইঞ্জিন বসানো হয়। এই ট্রেনটি ১৭টি স্টেশনে থামত এবং ৬-৭ ঘন্টায় এই যাত্রা শেষ করত।
ভারতের স্বাধীনতার পর চুক্তি হয়েছিল
স্বাধীনতার পরে, ভারতীয় রেলওয়ে ব্রিটিশ কোম্পানির সঙ্গে একটি চুক্তি করে। এর অধীনে ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে প্রতি বছর কোম্পানিকে রয়্যালটি দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, কোম্পানিটি প্রতি বছর ১ কোটি ২০ লাখ টাকা রয়্যালটি পায়।
বিপুল রয়্যালটি পাওয়ার পরও ব্রিটিশ কোম্পানি এই ট্র্যাকটির রক্ষণাবেক্ষণে কোনো নজর দেয় না, যার কারণে এই ট্র্যাকটি সম্পূর্ণ জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এটিতে চলমান শঙ্কুতলা এক্সপ্রেসও ২০২০ সালে বন্ধ হয়ে গেছে। আবারও এই ট্রেন চালানোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বলা হচ্ছে, ভারতীয় রেল এই ট্র্যাকটি আবার কেনার চেষ্টা করলেও তা সফল হয়নি।