আর মাত্র কদিন। তার পরেই পূর্ণ হতে চলেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের একবছর। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি পূর্ণ হতে চলেছে ১ বছর। আর তার আগেই খুব তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে নিজেদের লাইব্রেরিগুলি থেকে লক্ষ লক্ষ বই সরিয়ে নিল ইউক্রেন। জানা গিয়েছে, গত নভেম্বরেই প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ বই সরিয়ে নিয়েছে কিয়েভ। বইগুলি সোভিয়েত যুগের। বেশির ভাগই রুশ ভাষায় লেখা। এতদিন অবশ্য বিষয়টা অজানাই ছিল। গতকাল সোমবার ইউক্রেনের এক আইনপ্রণেতা ইয়েভহেনিয়া ক্রাভচুক এই সব কথা বলেছেন। তার পরই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।
গতকাল ইউক্রেনের পার্লামেন্টের ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে ইয়েভহেনিয়া ক্রাভচুকের ওই বক্তব্যটি রয়েছে। ইউক্রেনের মানবিক সহায়তা ও তথ্য নীতিবিষয়ক পার্লামেন্ট কমিটির উপপ্রধান ইয়েভহেনিয়া ক্রাভচুক বলেছেন, সরিয়ে নেওয়া ১ কোটি ৯০ লাখ বইয়ের মধ্যে ১ কোটি ১০ লাখ বই-ই রুশ ভাষায় লেখা। গ্রন্থাগারে সোভিয়েত যুগে ইউক্রেনীয় ভাষায় রচিত কিছু বইও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে হামলায় সমর্থনকারী লেখকদের বইও সরিয়ে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে প্রত্যাহার করা বইগুলি নিয়ে কী করা হয়েছে, সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি।
২০১৪ সালেই ইউক্রেনের ক্রিমিয়া দ্বীপকে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করার পর থেকে রুশ ভাষার বই ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জোরদার করেছিল কিয়েভ। ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বহমান সাংস্কৃতিক বন্ধন ছিন্ন করার লক্ষ্যে রুশ ভাষায় রচিত বইগুলির বিতরণ নিষিদ্ধ করা হয়।
ক্রাভচুক বলেছেন, আমাদের গ্রন্থাগারগুলিতে যে অনুপাতে রুশ ও ইউক্রেনীয় ভাষার বই ছিল তা খুবই দুঃখজনক। যত দ্রুত সম্ভব ইউক্রেনীয় ভাষায় লেখা বই কেনার ব্যাপারে আলোচনা চলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। জানা গিয়েছে, ইউক্রেনের গ্রন্থাগারে থাকা বইগুলির প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি বইই রুশ ভাষায় লেখা।
ইউক্রেনিয়ান হল ইউক্রেনের একমাত্র অফিশিয়াল ভাষা। ২০১৯ সালে কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজি-র এক জরিপে দেখা গিয়েছিল, দেশটিতে বেশির ভাগ সময়েই ইউক্রেনিয়ান ভাষায় কথা বলেন এমন মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার অর্ধেক থেকেছে। আর বেশির ভাগ সময়েই রুশ ভাষায় কথা বলেন এমন মানুষের সংখ্যা থেকেছে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ।