শেষবারের মতো মায়ের সঙ্গে কথা, তোমরা ভালো থেকো, ভাই বোনের খেয়াল রেখো। তারপরই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করলেন ইস্টবেঙ্গল জুনিয়রের প্রাক্তন খেলোয়াড় প্রদীপ বাড়ুয়া। পড়নে লাল-লুদ জার্সি।
উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের বাসিন্দা প্রদীপ। নেশা ছিল ফুটবল খেলা। ইস্টবেঙ্গল জুনিয়রের হয়ে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে খেলে এসেছেন। কিন্তু সাফল্য আসছিল না। ফলে গ্রাস করছিল হতাশা। যার পরিণতি হল মর্মান্তিক। লাল-হলুদ জার্সি পরা অবস্থায় বাড়ির অদূরে মিলল যুবকের ঝুলন্ত দেহ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে বুকফাটা কান্না নিয়ে মাকে ফোন করেন প্রদীপ। মাকে ভালো থাকার কথাও বলে। এমনকি ভাই ও বোনকে দেখে রাখারও কথা বলেন। কিন্তু কিছু বুঝতে পারেনি তাঁর মা। কিন্তু তাঁর কান্না শুনে সন্দেহ হয়। সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন পরিবারের লোকজন। কিন্তু হদিশ মেলেনি। তাই অশোকনগর থানায় মিসিং ডায়েরি করা হয়। পুলিশ তল্লাশি চালাতেই বাড়ির অদূরে আম গাছে উদ্ধার হয় প্রদীপের ঝুলন্ত দেহ। পরনে ছিল ইস্টবেঙ্গলের জার্সি। ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন মৃতের পরিবারের সদস্য সহ এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দারদের অনুমান, অবসাদের কারণেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন যুবক।
অশোকনগরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। পরিবারের সদস্য বলতে বাবা, মা, বোন ও ভাই। বরাবরই ফুটবলের প্রতি ভালবাসা ছিল প্রদীপের। একটা সময়ে ইস্টবেঙ্গল জুনিয়র দলের হয়ে খেলেছেন তিনি। ম্যাঞ্চেস্টারেও খেলেছেন। ভেবেছিলেন ফুটবল খেলেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরা রয়ে গিয়েছে। এক নিমিষে নিভে গেল প্রদীপ। সংসার টানতে জলের ব্যবসা শুরু করেছিলেন প্রদীপ। চিন্তা ছিল, বোনের বিয়ে ও ভাইয়ের চাকরি। এদিকে নিজের স্বপ্নও পূরণ হয়নি। সবমিলিয়ে প্রবল অবসাদে ভুগছিলেন প্রদীপ। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।