প্রায় ৮ কিলোগ্রামের সমান ওজনের একটি পাথরখণ্ড। পাওয়া গিয়েছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। আন্টার্কটিকায় পাওয়া গিয়েছিল একটি উল্কাপিণ্ড, বা মিটিওরাইট। আন্টার্কটিকা চিরকালই এ ধরনের বস্তুর গবেষণার জন্য আদর্শ। সব সময় যে উল্কাপিণ্ড এসে আছড়ে পড়ে এখানে আর তার পরই বিজ্ঞানী বা গবেষকদের হাতে উল্কাপিণ্ড বা ধূমকেতুর টুকরো নিয়ে চর্চা করার সুযোগ আসে, তা নয়; এখানে প্রায়শই বরফের আস্তরণ থেকেও নানা উল্কাখণ্ড বা মহাজাগতিক কোনও পাথরখণ্ড মেলে যা থেকে গবেষণা করে এই সৃষ্টি সম্বন্ধে অনেক মূল্যবান তথ্য জানা যায়। আন্টার্কটিকার অ্যাকটিভ গ্লেসিয়ার থেকে অনেক সময়েই এ ধরনের নমুনার চিহ্ন মেলে।
আন্টার্কটিকায় এ ধরনের নমুনা-পাথর পাওয়ার কিছু বাস্তব সুবিধাও আছে। গোটা এলাকাটাই আসলে সাদা বরফে মোড়া, আর গোটা এলাকা জুড়ে প্রায় একই ধরনের ভূপ্রকৃতি। সেখানে কোনও অন্য রঙের বস্তু চট করে নজরে পড়ে যায়। তবে আন্টার্কটিকায় এত বড় পাথরখণ্ড চট করে পাওয়া যায় না। গত ১০০ বছরে ৪৫ হাজার মিটিওরাইট পাওয়া গিয়েছে আন্টার্কটিকায়। তবে সেগুলির গড় ওজন কয়েকশো গ্রাম। প্রায় ৮ কিলোর কাছাকাছি এত বড় মাপের উল্কাপিণ্ড স্মরণকালের মধ্যে মেলেনি আন্টার্কটিকায়।
এই গবেষণাদলের অন্যতম সদস্য মারিয়া ভালদেস শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে এ নিয়ে যে গবেষণা তাঁরা চালিয়েছেন, তা নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি জানান, আকার-আকৃতিটা উল্কাখণ্ডের ক্ষেত্রে খুব বড় কোনও ইস্যু নয়, কেননা, অনেক সময়েই খুব ছোট কোনও নমুনাখণ্ডেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সন্ধান মেলে। তবে অন্য আর এক গবেষক বলেছেন, এ ধরনের বড় আকার-আকৃতির উল্কাপিণ্ডের সন্ধান পাওয়াটাও একটা সৌভাগ্যের ব্যাপার কোনও সন্দেহ নেই।
প্রসঙ্গত, যে উল্কাখণ্ডটি গত বছর পাওয়া গিয়েছিল, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে জানা গিয়েছে, এটি মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝখানের অঞ্চলে যে অ্যাস্টেরয়েড বেল্ট রয়েছে তারই অংশবিশেষ। আরও বড় কথা, এর মধ্যে আমাদের সৌরসংসারের আদি সময়কার কিছু পদার্থের নমুনাচিহ্নও মিলেছে। যা নিয়ে স্বভাবতই উল্লিত বিজ্ঞানীরা।