Padma Bhushan Vani Jairam: পদ্ম ভূষণে সম্মানিত আধুনিক ভারতের ‘মীরা’! চেনেন অসাধারণ এই সংগীতশিল্পীকে?

 এ বছর যে ন’জন ‘পদ্ম ভূষণ’ পেয়েছেন, তার মধ্যে ‘আর্ট’ বিভাগে দুজন। একজন তামিল নাডুর বাণী জয়রাম, অন্যজন হিন্দি ছবির অন্যতম প্রখ্যাত ফিমেল ভয়েস মারাঠি সুমন কল্যাণপুর। বহু সম্মাননা ও পুরস্কার সারা জীবন ধরে পেয়েছেন আধুনিক ভারতের মীরা’ বাণী জয়রাম। অবশেষে এই পদ্ম ভূষণ প্রাপ্তি। যা তাঁর প্রাপ্য ছিল বলেই মনে করে সংশ্লিষ্ট মহল।

বাণী জয়রাম তামিল নাড়ুর ভেলোরে এক তামিল পরিবারে ১৯৪৫ সালের ৩০ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলন। তাঁর পরিবার ছিল শাস্ত্রীয় সংগীতে প্রশিক্ষিত। ছোটবেলায় নাম ছিল কলাবাণী। তাঁর মা পদ্মাবতী, নিজের গুরু রঙ্গ রামানুজ আয়েঙ্গারের কাছে বাণীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য নিয়ে যান। সেখানে বাণী কবি মুথুস্বামী দীক্ষিতের কিছু কবিতাও শিখেছিলেন। পরে তাঁকে কাদালুর শ্রীনিবাস আয়েঙ্গার, টি আর বালাসুব্রহ্মণিয়ান এবং আর এস মণির মতো গুরুদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্ণাটকী সঙ্গীতের প্রশিক্ষণ নিতে হয়। ১৯৬০ এর দশকের শেষের দিকে, বিয়ের পরে, তিনি স্বামী জয়রামের সঙ্গে মুম্বই চলে যান। তাঁর গানের দক্ষতা জেনে জয়রাম বাণীকে হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতের প্রশিক্ষণ নিতে উদ্বুদ্ধ করেন।

দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রে নেপথ্য সংগীতশিল্পী হিসেবেই বেশি পরিচিত বাণী। তাঁর পেশাজীবন শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালে। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে গান গেয়ে চলেছেন। সহস্রাধিক সিনেমাতে ১০ হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করেছেন। গেয়েছেন অসংখ্য ভক্তিগীতি। নিজস্ব অ্যালবাম তো আছেই। ভারতে এবং বিদেশেও অসংখ্যবার একক সংগীতানুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।

এই ভাবে ছোট থেকেই নিজের শিল্পসত্তার জাগরণের জন্য আগাগোড়া অনুকূল একটি পরিবেশ বাণী পেয়েছিলেন। তেলুগু চলচ্চিত্র এবং ভক্তিমূলক গানে বাণীর অবদান বিপুল। তিনি ‘অভিমানবন্তুলু’ (১৯৭৩) চলচ্চিত্রের জন্য তাঁর প্রথম তেলুগু গানটি রেকর্ড করেছিলেন। এস পি কোদনদাপানি রচিত ‘এপটিভালিকাডুর না স্বামী’ গানটি ছিল শাস্ত্রীয় নৃত্যভিত্তিক একটি গান। তবে ‘পূজা’ (১৯৭৫) ছবির জন্য গাওয়া গানগুলিই তাঁকে তেলুগু সিনেমার একজন নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে প্রথম সারিতে নিয়ে আসে।

বসন্ত দেশাইয়ের সঙ্গে পরিচয় ছিল বাণীর। সেই সূত্রে হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বাণীর যোগাযোগ ঘটে।  এবং শুধু যোগাযোগই নয়, তিনি হৃষীকেশবাবুর ছবিতে গাইবার সুযোগও পান। হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘গুড্ডি’ (১৯৭১) ছবিতে গাওয়া তাঁর গান রাতারাতি বিখ্যাত হয়। এই ছায়াছবির মাধ্যমে তাঁর নাম হিন্দি ছায়াছবির জগতেও প্রথম সারিতে উঠে আসে। বসন্ত দেশাই বাণীকে ছবিতে তিনটি গান রেকর্ড করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন যার মধ্যে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা জয়া বচ্চনের লিপে ছিল ‘বোল রে পাপিহারা’। গানটি খুবই জনপ্রিয় হয়। ‘মিয়াঁ কি মলহার’ রাগে রচিত এই গানটিতে তাঁর শাস্ত্রীয় সংগীত গাইবার দক্ষতার পরিচায়ক ছিল।

বাণী প্রবীণ কণ্ঠশিল্পী পণ্ডিত দিনকর কৈকিনির সঙ্গে ‘মীরা’ ছবিতে গান করেন। এই ছবির সংগীত পরিচালক ছিলেন পণ্ডিত রবিশঙ্কর। এই ছবির গানই বাণীকে এক ভারতজোড়া নামে পরিণত করেছিল। এর পর থেকেই তিনি মীরা নামে পরিচিত হতে শুরু করেন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.