সব সংগঠনের নেতাদের নিয়ে আরএসএসের সমন্বয় বৈঠক নতুন কিছু নয়। রাজ্য থেকে জেলা সব স্তরেই নিয়মিত এমন বৈঠক হয়ে থাকে। বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ঠিকঠাক রাখতেই এই ধরণের বৈঠক হয়। কিন্তু সেই বৈঠকে সঙ্ঘপ্রধান তথা সর-সঙ্ঘচালক উপস্থিত থাকাটা বেনজির। এর আগে এমন কোনও বৈঠকের কথা মনে করতে পারছেন না সঙ্ঘ কর্তারা। আর সেই বৈঠকেই হাজির থাকলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়।
দলবদলে অনেক আগেই গেরুয়া শিবিরে এসেছেন একদা তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড মুকুল রায়। কিন্তু এই প্রথম আরএসএসের কোনও এমন বৈঠকে উপস্থিত থাকলেন তিনি। টানা দু’দিন ধরে হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় চলে বৈঠক। শনি ও রবিবার তাঁতিবেড়িয়া সঙ্ঘের স্কুলে সেই বৈঠকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে সংগঠন সম্পাদক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়রা হাজির ছিলেন। এঁরা সকলেই শুধু সঙ্ঘের পুরনো স্বয়ংসেবক। প্রচারকও। কিন্তু মুকুল রায় এর আগে এমন কোনও বৈঠকে হাজির থাকেননি। সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতের সেই বৈঠকে রাজ্যের বাছাই সঙ্ঘ পরিবারের কর্তারা ডাক পেয়েছিলেন। উপস্থিত ছিলেন ৩৫ সংগঠনের উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের প্রধান নেতারা। ২৩৫ জনের মধ্যে ছিলেন মুকুল রায়ও।
মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে ওই বৈঠকেই তিনি বলেন, যাঁরা অন্য ভাবধারা থেকে আসছেন তাঁদের স্বাগত জানাতে হবে। একই সঙ্গে তাঁদের সঙ্ঘের অনুশাসনে অভ্যস্ত করতে হবে।
সেই অনুশাসনের মধ্যে দু’টো দিন কাটালেন মুকুল রায়। তবে অন্যান্যদের মতো তিনি রাত্রিবাস করেননি। বিশেষ কারণে শনিবার রাতে কলকাতায় ফিরে এলেও রবিবার নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছে যান বর্গে। কেমন ছিল এই বর্গের দিনযাপন?
এক আরএসএস কর্তা জানিয়েছেন, সঙ্গের কোনও কার্যক্রমেই কারও জন্যই কোনও বিশেষ ব্যবস্থা হয় না। সকলের জন্য এক ব্যবস্থা। সেটাই সকলকে মেনে নিতে হয়। এটাই সঙ্ঘের অনুশাসনের অন্যতম বড় বিষয়। আর সেই অনুশাসন মেনে নিয়েই অন্যান্যদের মতো সময় কাটিয়েছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষেধাজ্ঞা থেকে গেরুয়া ধ্বজের সামনে দাঁড়িয়ে দেশমাতৃকার উদ্দেশে প্রার্থনা করা সবেতেই যোগ দিয়েছেন উৎসাহের সঙ্গে।
এই বর্গে মোহন ভাগবত ছাড়াও ছিলেন আরএসএসের ক্ষেত্র কার্যবাহ গোপাল মহাপাত্র, ক্ষেত্র প্রচারক প্রমুখ প্রদীপ জোশির মতো বাংলা ও ওড়িশার প্রধান সঙ্ঘকর্তারা। দুপুরে করলা ভাজা, মুগ ডাল, পাঁচ মেশালি তরকারি, চাটনি আর রাতে
ডাল, তরকারি, রুটি, ভাত, একটা করে মিষ্টি। এই ছিল মেনু।