কুমারগঞ্জে প্রতারণার ঘটনায় গ্রেফতার মগরাহাটের বাসিন্দা, ঘটনা নিয়ে পুলিশ ও শাসক দলকে কাঠগড়ায় তুললো বিজেপির রাজ্য সভাপতি

কুমারগঞ্জে মহিলাদের সাথে প্রতারণার ঘটনায় মগরাহাটের যোগ। গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত সামসুদ্দিন গাজী। শনিবার ধৃতকে বালুরঘাট জেলা আদালতে পাঠিয়ে নয় দিনের পুলিশ রিমান্ড নিয়েছে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ।

এদিকে এই ঘটনা নিয়ে চিটফান্ড যোগের অভিযোগ তুলে পুলিশ ও শাসক দলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসনের মদত ছাড়া কোনো ভাবেই প্রত্যন্ত এলাকায় এভাবে গ্রামের মহিলাদের সাথে কেউ প্রতারণা করবার সাহস দেখাতে পারে না। শুধু তাই নয়, এর সাথে শাসক দলের নেতাদেরও জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, মাসে মোটা অঙ্কের মাসোহারা কন্ট্রাক্ট হবার কারণে তারাও চুপ করে রয়েছে এবং সে কারণেই এসব লোকেরা এলাকার গরিব মানুষদের সর্বশান্ত করছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি কুমারগঞ্জের ডাঙ্গারহাটে মহিলাদের শাড়িতে পুঁথির কাজ দেবে বলে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলে একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা। শাড়ি প্রতি ১৫০০ টাকা রেজিষ্ট্রেশনে জমা নেন ওই প্রতারিত সংস্থা। পুঁথি বসালেই অতিরিক্ত চারশো টাকা মিলবে এই প্রলোভনে ঘটি বাটি বিক্রি করে গ্রামের মহিলারা তাদের সর্বস্ব টাকা লাগিয়ে দেয় ওই সংস্থায়। সব মিলিয়ে যার হিসেব প্রায় কোটি টাকার কাছাকাছি। যার পরেই রাতারাতি এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় ওই সংস্থা। আর এতেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন গ্রামের মহিলারা। গত বুধবার মহিলাদের ওই বিক্ষোভের মুখে পড়ে বেধড়ক মার খেতে হয়েছে পুলিশ কর্মীদেরও। ভাঙ্গচুর হয়েছে এলাকার এক স্থানীয় বাসিন্দার বাড়ি ঘরও। যিনি প্রত্যক্ষভাবে মদত দিয়েছিলেন ওই সংস্থাকে। যাকেও ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে কিছু গ্রামবাসীও। যাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এই ঘটনার মূল পান্ডা সামসুদ্দিন গাজীকে শুক্রবার রাতে মগরাহাট থেকে গ্রেফতার করেছে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। এদিন ধৃতকে বালুরঘাট জেলা আদালতে পাঠিয়ে নয়দিনের পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

আর যে ঘটনা নিয়েই পুলিশ ও শাসক দলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তার কথায়, গ্রামের মহিলাদের এভাবে একটি ভুয়ো সংস্থা প্রতারিত করছে আর পুলিশের কাছে কোনো খবর নেই তা হতে পারে না। তাহলে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সহ যাবতীয় বিভাগ সব ব্যর্থ। ঘটনার পিছনে শাসক দলের নেতারাও রীতিমতো মাসোহারা নিয়েই জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ সুকান্তর। তাছাড়া কখনই এলাকায় এভাবে একটি সংস্থা মহিলাদের সর্বস্ব লুট করতে পারে না।

সুকান্ত মজুমদার বলেন, পুলিশ ও শাসক দলের মদতেই ওই ভুয়ো সংস্থা গ্রামের মহিলাদের সর্বস্ব লুট করেছে। পুলিশের এখন উচিত কোনো রঙ না দেখে অভিযুক্ত সকলকেই জেলে পোড়া।

জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে জানিয়েছেন, মগরাহাট থেকে ঘটনার মূল পান্ডাকে গ্রেফতার করে এদিন আদালতে পাঠিয়ে পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.