কেন্দ্রীয় প্রকল্প মিড ডে মিলের টাকা বগটুই কাণ্ডে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের অনুদান দেওয়ার অভিযোগ উঠল রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। যদিও এনিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে জেলা প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের প্রাক মুহূর্তে বগটুই কাণ্ডে অনুদান নিয়ে বাজার গরম করতে কোমর বেঁধেছে বিজেপি। এই নিয়ে টুইট করেছেন, বিরোধীদলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
প্রসঙ্গত, ২১ মার্চ রাত্রে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে বীরভূমের রামপুরহাট বগটুই মোড়ে বোমা মেরে খুন করা হয় বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের ভাদু শেখকে। খুনের বদলা নিতে ওইদিন রাতেই বগটুই গ্রামের একাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের। ঘটনার পর ২৬ মার্চ বগটুই গ্রামে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রতিশ্রুতি মতো ওইদিন নিহতদের পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেন। পরে জানা যায় ওই টাকা মিড ডে মিলের ফান্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। নিহতদের কাছে থাকা চেক থেকে তার প্রমাণ মিলেছে।
গত বছরের ২৪ মার্চ মিহিলাল শেখ এবং মবিনা বিবির হাতে যথাক্রমে পাঁচ এবং এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়েছে। ২৬ মার্চ বানিরুল শেখ ও মিহিলাল শেখের হাতে তিন লক্ষ টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। ১২ এপ্রিল সোনা শেখের হাতে এক লক্ষ ২৫ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি চেকে সই রয়েছে রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের বিডিও দীপান্বিতা বর্মণের। এনিয়ে তাঁকে ফোনে ধরা হলে বিডিও বলেন, “যা বলার জেলা শাসক বলবেন। আমি কিছু বলব না।”
মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে এই বিষয়ে জল ঘোলা করতে চাইছেন না জেলাশাসক বিধান রায়। তাই তিনিও মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
তবে এনিয়ে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে। দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, “এই সরকার মিথ্যাশ্রী সরকার। এরা শিশুদের পুষ্টিকর খাবারের টাকা অন্যখ্যতে খরচ করে দিচ্ছে। আমরা এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনের দ্বারস্থ হব।”
পরে এই নিয়ে টুইট করেন বিরোধীদলনেতা শুভেন্দু অধীকারী। টুইটে তিনি অভিযোগ করেছেন, বগটুইয়ে রাজ্য সরকারের দেওয়া টাকা আসলে মিড ডে মিলের টাকা। শুভেন্দুর অভিযোগ, কেন্দ্রের বরাদ্দ করা মিড ডে মিলের টাকা বগটুইয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এই নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। এই টুইটে তিনি ট্যাগ করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী ধর্মেন্দ্রপ্রধান কে। একইসঙ্গে শুভেন্দু অভিযোগ করেছেন ত্রাণ তহবিলে টাকা নেই অথচ কম্বল বিতরণ হচ্ছে মিড ডে মিলের টাকায়।
তবে স্বজনহারা ফটিক শেখ, মিহিলাল শেখ বলেন, “আমরা সে সময় অসহায় হয়ে পড়েছিলাম। ফলে কোন খাত থেকে টাকা দিয়েছে বলতে পারব না।”