জন্মদিনের উপহার? এক হিসেবে বলা যায় হয়তো, আবার বলা চলেও না। কেননা, অনেকদিনই আশির কোটা পেরিয়েছেন। সামনেই তাঁর ৮৬তম জন্মদিন। তাঁর শ্রোতাদের একটা অংশ মনে করে– এ বয়সে কোনও সম্মানই কি সংশ্লিষ্ট শিল্পীর প্রতি সুবিচার করে? কিন্তু দেরি হলেও এটা একটা জরুরি স্বীকৃতি তো বটেই। যা সদ্য পেলেন সুমন কল্যাণপুর। এ বছর যে ন’জন ‘পদ্ম ভূষণ’ পেয়েছেন তার মধ্যে ‘আর্ট’ বিভাগে দুজন– একজন তামিল নাডুর বাণী জয়রাম (ইনিও কণ্ঠসংগীত শিল্পী), অন্যজন হিন্দি ছবির অন্যতম প্রখ্যাত ফিমেল ভয়েস সুমন কল্যাণপুর।
সুমন বেশ কিছু মনে রাখার মতো বাংলা গানও গেয়েছেন। ধরনের দিক দিয়ে সুমন কল্যাণপুরের কণ্ঠটি ছিল ‘নাজুক’ ও ‘পাতলি’ গোত্রের। অনেকেই তাঁর কণ্ঠকে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলতেন। কিন্তু সুমন কোনও দিনই লতা-অনুসারী বা লতাকে নকলকারী শিল্পী ছিলেন না। তাঁর নিজস্ব স্টাইল ও সিগনেচার ছিল। তা সত্ত্বেও শ্রোতারা গুলিয়ে ফেলতেন। যখন গানের কপিরাইট-প্রশ্নে লতা-রফির দ্বন্দ্ব তৈরি হল, তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে আর গাইলেন না, তখন রফির সঙ্গে ফিমেল ভয়েস হিসেবে উঠে এলেন সুমন।
যদিও এর ঢের আগেই তিনি কাজ শুরু করেছেন এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠাও করে ফেলেছেন মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। ১৯৫৩ সালে তাঁর প্রথম রেকর্ড। কন্নড মারাঠি হিন্দি ও বাংলা ছবি মিলিয়ে ৮০০-র বেশি গান তাঁর।
‘বুঝা দিয়ে হ্যায় খুদ আপনে হাথোঁ’ ‘জো হাম পে গুজরতি হ্যায়’ ‘না না করতে পেয়ার তুমহি সে’ ‘ মেরে মেহবুব না যা’ ‘না তুম হামে জানো”না জানে কাঁহা তুম থে’ ‘আজ কাল কেরে মেরে’ ‘রহে না রহে হাম’-এর মতো অসাধারণ সব হিন্দি গানের জন্য তিনি চিরকাল বেঁচে থাকবেন শ্রোতার মনে। শ্রোতারা তাঁর সুর আজও গুনগুন করেন। হিন্দিতে সুমনের অধিকাংশ গানই শচীন দেব বর্মনের সুরে।