অনেক সময় অপমানের জ্বালা, চোট থেকে বড় হয়ে দাঁড়ায়। আর সেই অপমান যদি নোভাক জোকোভিচের (Novak Djokovic) মতো চ্যাম্পিয়ন পেয়ে থাকেন, তাহলে বদলা তো নেবেনই। আর সেটাই করলেন সার্বিয়ার (Serbia) টেনিস তারকা। গত বছর কোভিড ভ্যাকসিন (Covid Vaccine) নিতে অস্বীকার করার জন্য, অস্ট্রেলিয়ায় (Australia) পা রেখেও, তাঁকে ‘ডিপোর্ট’ করে দিয়েছিল সেই দেশের সরকার। এক বছর ধরে সেই অপমান বুকে নিয়ে বেড়িয়েছেন জোকার। ছিলেন সঠিক সুযোগের অপেক্ষায়। শুক্রবার চলতি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে (Australian Open 2023) রড লেভার এরিনায় তাঁর কাছে সেই সুযোগ চলে এল। চোট উপেক্ষা করে আমেরিকার (America) টমি পলকে (Tommy Paul) ৭-৫, ৬-১, ৬-২ ব্যবধানে উড়িয়ে দিলেন ২১টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক। এবার তাঁর সামনে মেগা ফাইনালে নামবেন গ্রিসের (Greece) স্তোফানোস চিচিপাস (Stefanos Tsitsipas)।
পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২২টি গ্র্যান্ড স্লামের মালিক রাফায়েল নাদাল (Rafael Nadal)। নোভাকের গ্র্যান্ড স্লামের সংখ্যা ২১। কোভিড ভ্যাকসিন নিতে না চাওয়ার জন্য পিছিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে তিনি চিরপ্রতিদ্বন্দী নাদালকে ছুঁয়ে ফেলতে মরিয়া হয়ে আছেন। দুরন্ত ছন্দেও রয়েছেন নোভাক। সেমি ফাইনালে ২৫ বছরের টমি পলকে হেলায় হারালেন। প্রথম সেটে টমি কিছুটা লড়াই দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ৭-৫ ব্যবধানে শেষ হয় প্রথম সেট। তবে বাকি দুটি সেটে প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতেই দেননি। বাকি দুটি সেট ৬-১, ৬-২ ব্যবধানে জেতেন।
শেষ চারের লড়াইয়ে দাপট দেখালেও জোকার কিন্তু তাঁর পরিবার ও টিমের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন। ম্যাচ জয়ের পর তাঁর প্রতিক্রিয়া, “কি আর বলব, আমি ধন্য। এতটুকুই বলতে পারি। আমি সবসময় জেতার চেষ্টা করি। আসলে এটা তো ইনডিভিউজুয়াল স্পোর্টস, তাই খেলোয়াড়ের দিকেই সবার নজর থাকে। তবে আমার এই সাফল্যের নেপথ্যে অনেক অবদান আমার পরিবার ও টিমের সদস্যদের থাকে। ওরা পাশে না থাকলে সাফল্য পেতাম না। কারণ ওরাই তো ভালো-মন্দ সময় আমাকে আগলে রাখে। তাই এটা শুধু আমার একক সাফল্য নয়। এই সাফল্যের দাবিদার আমার থেকেও ওরা অনেক বেশি।”
সেমি ফাইনালে প্রায় আড়াই ঘণ্টা লড়াই হল। ,টমি শুরুটা ভালো করলেও, জয়ের গন্ধ পেয়ে যাওয়া জোকোভিচের আর পারলেন না। একটা সময় টমিকেই খেলতে দিচ্ছিলেন। বিপক্ষের সার্ভিস ভাঙারও চেষ্টা করেননি জোকার। শক্তি জমিয়ে রেখেছিলেন নিজের পরের সার্ভিস গেমের জন্য। আর এতেই বাজিমাত করলেন বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর খেলোয়াড়।
বাঁ পায়ের উরুর পেশিতে চোট নিয়েই বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলছেন জোকার। বলা ভাল দাপটে খেলছেন। তাঁর চোট নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁদের জবাব দিয়েছেন আগেই। তাঁর র্যাকেট জবাব দিচ্ছেন কোর্টের প্রতিপক্ষদের। সার্বিয়ান তারকা মারলেন ১২টি ‘এস’। জবাবে টমি মারলেন মাত্র চারটি। প্রথম সার্ভিসের ক্ষেত্রে জোকোভিচের সাফল্য ৬২ শতাংশ, টমির ৬৫ শতাংশ। প্রথম সার্ভিসে জোকোভিচ ৭৫ শতাংশ পয়েন্ট জিতলেন। টমি জিতলেন ৫২ শতাংশ পয়েন্ট। ব্রেক পয়েন্ট জেতার ক্ষেত্রেও টমি থেকে অনেক এগিয়ে রইলেন সার্বিয়ার তারকা। রবিবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনাল। রড লেভার এরিনায় ভারতীয় সময় দুপুর দুটো নাগাদ ফাইনালে নামবেন জোকোভিচ। প্রতিপক্ষ চিচিপাস।