ভারতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করবে পাঁচ সদস্যের কমিটি। কেন্দ্রের গঠিত কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বক্সার মেরি কম। পাশাপাশি আগামী এক মাস এই কমিটিই পরিচালনা করবে কুস্তি সংস্থার কাজ।
সোমবার কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর কমিটির পাঁচ সদস্যের নাম ঘোষণা করেন। দেশের প্রথম সারির এক ঝাঁক কুস্তিগিরের তিন দিনের অবস্থান প্রতিবাদের পর শনিবার তদন্ত কমিটি গঠনের আশ্বাস দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বিক্ষোভকারী কুস্তিগিরদের সঙ্গে শুক্রবার রাতে দীর্ঘ বৈঠক করেছিলেন অনুরাগ। মেরির নেতৃত্বাধীন কমিটিতে রয়েছেন অলিম্পিক পদকজয়ী কুস্তিগির যোগেশ্বর দত্ত, প্রাক্তন ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় এবং মিশন অলিম্পিক সেলের সদস্য তৃপ্তি মুরগুন্ডে, ‘টপস’-এর প্রাক্তন শীর্ষ কর্তা রাজাগোপালন এবং সাইয়ের প্রাক্তন এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রাধিকা শ্রীমন। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রককে রিপোর্ট দেবে এই কমিটি।
অনুরাগ বলেছেন, ‘‘যৌন হেনস্থার যে অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্ত করবে মেরি কমের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিটি। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে। আপাতত কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি দায়িত্ব পালন করবেন না। সংস্থার দৈনন্দিন কাজ থেকে তাঁকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। সংস্থার প্রতি দিনের কাজ আগামী এক মাস এই কমিটি দেখাশোনা করবে।’’
গত বুধবার থেকে নয়াদিল্লির যন্তর মন্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বেশ কিছু কুস্তিগির। সেই দলে ছিলেন বিনেশ ফোগত, বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক-সহ একাধিক কুস্তিগির। তাঁদের অভিযোগ, ব্রিজভূষণ একাধিক কুস্তিগিরকে যৌন নিগ্রহ করেছেন। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদকজয়ী বিনেশ দাবি করেছিলেন, লখনউয়ে জাতীয় শিবিরে মহিলা কুস্তিগিরদের নিয়মিত যৌন হেনস্থা করতেন কোচেরা। এমনকি, ব্রিজভূষণের ভয় দেখিয়ে জোর করে কুস্তিগিরদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ারও চেষ্টা করতেন তাঁরা। বিনেশ যদিও জানিয়েছেন, নিজে কোনও দিন এই পরিস্থিতির সম্মুখীন তাঁকে হতে হয়নি।
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ব্রিজভূষণ। তিনি বলেছেন, “বুঝতেই পারছি না কেন এই অভিযোগ করা হচ্ছে। হঠাৎ করে এখন কেন অভিযোগ উঠছে? সবটাই ষড়যন্ত্র। এই অপবাদ নিয়ে থাকা যায় না।” যদিও তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ব্রিজভূষণকে সর্বভারতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র।
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করার জন্য সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থাও। সেই কমিটিতেও রয়েছেন মেরি এবং যোগেশ্বর।