ছক কষেই বাবুলকে আক্রমণ, কুশীলব অতি বাম বহিরাগতরা

নিজস্ব প্রতিবেদন: কে মেরেছে বাবুল সুপ্রিয়কে? তাঁকে আক্রমণ করার ঘটনা কি পরিকল্পিত?
আক্রমণকারীরা সম্ভবত ভাবতেই পারেনি, তাদের কীর্তির পুঙ্খানুপুঙ্খ ছবি উঠে যাবে উপস্থিত ফোটোগ্রাফারদের ক্যামেরায়। তারা হয়তো ভেবেছিল, আড়াল থেকে কাজ হাসিল করে ভিড়ে মিশে দিব্যি যাদবপুর ক্যাম্পাসের বাইরে চলে যেতে পারবে। কিন্তু বাবুল সুপ্রিয়র টুইটার অ্যাকাউন্টে প্রত্যেক আক্রমণকারীকেই চিহ্নিত করা গিয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নয়।
বাবুলের চুলের মুঠি ধরে টেনেছিল দেবাঞ্জন বল্লভ নামে এক যুবক। খোঁজখবর নিয়ে জানা গিয়েছে, এই দেবাঞ্জন ওরফে পিকু আসলে সংস্কৃত কলেজের ছাত্র ছিল। তবে এখন আর সে পড়াশোনা করে না। ওয়াকিবহাল ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, দেবাঞ্জন এখন পুরোদস্তুর অতি বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে। তার সঙ্গে অতি বাম ইউএসডিএফ নামক ছাত্র সংগঠনের যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সে মাঝেমাঝেই যাদবপুরে এসে আড্ডা মারত। সংগঠনেরও কাজ করত। বৃহস্পতিবার বাবুল সুপ্রিয়র ওপর হামলা চালানোর জন্য সে পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে ঘটনাস্থলে এসেছিল। যাদবপুরে নকশালপন্থী সংগঠনের তিনটি ভাগ রয়েছে। একটি হল ইউএসডিএফ। এই সংগঠনটি ভেঙে পরে র‌্যাডিকালস নামে একটি সংগঠন তৈরি হয়। র‌্যাডিকালস সংগঠনটি পুরোপুরি মাওবাদী। সিপিআই মাওইস্টের রাজনৈতিক কার্যকলাপে তাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। অন্য নকশালপন্থী সংগঠনটি হল সিপিআইএমএল লিবারেশনের অনুগামী। আইসা। ইউএসডিএফ, র‌্যাডিকালস ও আইসার সদস্যরা একযোগে এবিভিপির অনুষ্ঠানের ওপর হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এর পূর্বপ্রস্তুতিও ছিল।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সায়ন্তন দত্তর ফেসবুক পেজ থেকে পূর্বপরিকল্পনার বিস্তারিত হদিশ পাওয়া গিয়েছে। বাবুল সুপ্রিয় নিজেই গোটা বিষয়টি টুইটারে তুলে ধরে জানিয়েছেন, কী ভাবে এবিভিপি ও তাঁকে আগে থেকেই নিশানা করা। হয়েছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের প্রাক্তনী সায়ন্তন বুধবার রাত নটা নাগাদ ফেসবুক পোস্টে লিখেছিল, এবিভিপি যাদবপুরে পদক্ষেপ নিচ্ছে। যে কোনও মূল্যে একে রুখতে হবে। এই কারণে নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ ভুলে প্রত্যেক বিজেপি-বিরোধী ছাত্রকে বৃহস্পতিবার কেপি বসু মেমোরিয়াল হলের বাইরে জড়ো হতে হবে। সায়ন্তন লিখেছে, এই মুহূর্তে বিজেপিকে যেখানে যে ভাবে রুখে দেওয়ার যা যা কর্মসূচি নেওয়া হবে, তাই ন্যায্য ও সমর্থনযোগ্য। তাই যাদবপুরের ছাত্র রাজনীতি, এলিট ক্যাম্পাস, যাদবপুর-জেএনইউ বামদুর্গ ইত্যাদি নিয়ে সমালোচনা ছেড়ে আপাতত এইটুকু কমন মিনিমামের জন্য আমাদের একসঙ্গে আসা প্রয়োজন বলে মনে হয়। এই পোেস্ট ইচ্ছাকৃত ভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। হোয়াটসঅ্যাপেও বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পরিকল্পিত ভাবে ছাত্র-ছাত্রী ও বহিরাগতরা জড়ো হয়।
বাবুল সুপ্রিয়কে নিগ্রহের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘যাদবপুরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে কমিউনিস্ট ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেব। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দেশবিরোধীদের ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। এ জিনিস চলতে দেওয়া যায় না। রাজ্য বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও অর্জুন সিং এদিন রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করে জানান, অত্যন্ত পরিকল্পিত ভাবে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর ও এবিভিপি সদস্যদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে।

একদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.