ধর্মতলায় পুলিশ এবং আইএসএফ কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ নিয়ে মুখ খুললেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার (সিপি) বিনীত গোয়েল। শনিবার সন্ধের দিকে ঘটনাস্থলে যান তিনি। ধর্মতলায় দাঁড়িয়েই তিনি জানান, বিনা প্ররোচনায় পুলিশকে আক্রমণ করেছেন আইএসএফের কর্মী-সমর্থকরা। তাই জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে এবং আত্মরক্ষার জন্যই পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে দাবি করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকি-সহ মোট ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সিপি জানিয়েছেন আহতদের মধ্যে রয়েছেন, ডিসি সেন্ট্রাল, ডিসি সেন্ট্রাল ২, ডিসি সাউথ, বউবাজার থানা এবং হেয়ার স্ট্রিট থানার আইসিও। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমকে সিপি জানান, আইএসএফের কিছু কর্মী-সমর্থক দুপুরের দিকে ডোরিনা ক্রসিংয়ের উপর বসে পড়েন। ব্যস্ত রাস্তায় যান চলাচল অবরুদ্ধ হওয়ার কথা জানিয়ে অবরোধকারীদের উঠে যাওয়ার অনুরোধ জানায় পুলিশ। সিপির অভিযোগ, পুলিশের অনুরোধকে অমান্য করে হঠাৎই মারমুখী হয়ে ওঠেন আইএসএফের কর্মী-সমর্থকরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল, পাটকেল ছোড়া শুরু হয়ে যায়। সিপির কথায়, “আমরা ধৈর্য ধরেছিলাম। কিন্তু আমাদের পুলিশ আধিকারিককে ওরা মারতে শুরু করল। আমরা বাধ্য হয়েই কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করলাম। মৃদু লাঠিচার্জও করা হয়েছে।” এই ঘটনায় ভাঙচুর চালানো এবং পুলিশকে নিগ্রহ করায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার বিকেলে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে ধর্মতলায়। ভাঙড়ের রেশ এসে পৌঁছয় শহরের প্রাণকেন্দ্রে। যার জেরে স্তব্ধ হয়ে যায় মধ্য কলকাতার যান চলাচল। ভাঙড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন আইএসএফের কর্মীরা। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, শনিবার কলকাতায় সভা ছিল আইএসএফের। দলের কর্মীরা বিক্ষোভ দেখানোর পর তাঁদের উপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। কার্যত টেনেহিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয় ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে। পাল্টা পুলিশকে আক্রমণ করার অভিযোগ ওঠে নওশাদের দলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। উন্মত্ত জনতাকে থামাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। পাল্টা বাঁশ, লাঠি নিয়ে পুলিশকে তাড়া করেন আইএসএফের কর্মীরা।
রাস্তায় অবস্থানে বসে পড়া আইএসএফ কর্মী-সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে হঠাৎই মারমুখী হয়ে ওঠে পুলিশ। পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করে চটি, পাথর ছোড়া হয়। আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে দু’পক্ষেরই একাধিক জন আহত হয়েছেন। আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাননি সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও।