কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র উপরে হামলা কোনও আকস্মিক ঘটনা নয়। অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল এই হামলার। সেই অনুযায়ী ফেসবুকে পোস্ট করে আহ্বান জানানো হয়েছিল বিজেপি বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলিকে।
বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এবিভিপি। সেই অনুষ্ঠানেই সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে যোগ দিতে আসেন বাবুল সুপ্রিয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পা দেওয়া মাত্রই উত্তেজনা ছড়ায়। বিরোধী গোষ্ঠীর একদল পড়ুয়া তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে।
ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে যান বাবুল সুপ্রিয়। জামার কলার ছিঁড়ে যায় তাঁর। বাবুলের অভিযোগ, ভিড়ের মধ্যে তাঁর চুল ধরেও টানাটানি করা হয়। অবশেষে রাতের দিকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে উদ্ধার করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছালে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল রাজ্যপালকেও।
বৃহস্পতিবার দিনভর ধরে তাণ্ডব চলেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে এই ঘটনা ছিল পূর্ব-পরিকল্পিত। এদিন বিকেলের পর থেকেই ভাইরাল হতে শুরু করে একটি ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট। যেটি বুধবার রাত ৯টা বেজে ৩৮ মিনিট নাগাদ পোস্ট করা হয়েছিল। যদিও পরে তা মুছে দেওয়া হয়।
সেই ফেসবুক পোস্টে লেখা হয়েছিল যে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেপি বসু মেমোরিয়াল হলে আগামীকাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য গজিয়ে ওঠা এবিভিপি একটি ফ্রেশার্স ওয়েলকাল(এই বানানই লেখা ছিল) অর্গানাইজ করেছে, যেখানে বাবুল সুপ্রিয়, অচিন্ত্য বিশ্বাস, অগ্নিমিত্র পল থাকবেন।
এরপরে আরও লেখা হয় যে এই মুহূর্তে, বিজেপি বিরোধিতা, শুধুমাত্র বিজেপি নামক ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরোধিতা করা প্রয়োজন বলে যারা মনে করছেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে বলছি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকটি ছাত্র সংগঠন একসাথে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি আয়োজন করছে। বিজেপি বিরোধী সবাইকে সেখানে থাকার অনুরোধ জানাই।
বিজেপি বিরোধিতার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেপি বসু মেমোরিয়াল হলে দুপুর একটার সময়ে সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয় সেই ফেসবুক পোস্টে। সেই সঙ্গে পোস্টের শেষে বিশেষ দ্রষ্টব্যতে লেখা হয় যে, এই মুহূর্তে সর্বত্রই বিজেপিকে রুখে দেওয়ার জন্য যাবতীয় কর্মসূচি ন্যায্য এবং সমর্থনযোগ্য। সেই কারণে সকলকে সব সমালোচনা ভুলে একত্রিত হওয়ার কথা বলা হয়েছিল ওই ফেসবুক পোস্টে।
যিনি ওই ফেসবুক পোস্ট করেছিলেন তাঁর নাম হল সায়ন্তন দত্ত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের প্রাক্তন পড়ুয়া ছিলেন তিন। ফেসবুকে দেওয়া তথ্য অনুসারে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বনহুগলি এলাকার সরকারি আবাসনের বাসিন্দা তিনি।