নেপালের বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৬৮ জনের। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ওই বিমানে ছিলেন বিমান সেবিকা ওশিন আলে মাগার। ২৪ বছরের তরুণীও প্রাণ হারিয়েছেন ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায়। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন বাবা। মেয়েকে আটকাতে না পারার আক্ষেপ ভুলতে পারছেন না কিছুতেই।
রবিবার ছিল মাঘে সংক্রান্তি উৎসব। মকর সংক্রান্তির দিনটিকে এই নামেই উদ্যাপন করেন নেপালের মানুষ। উৎসবের দিনে মেয়েকে কাজে যেতে নিষেধ করেছিলেন ওশিনের বাবা মোহন। একটা দিন পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করে কাটাতে বলেছিলেন তাঁকে। কিন্তু ওশিন বাবার কথা শোনেননি। তিনি জানিয়েছিলেন, দু’টি ফ্লাইটে কাজ সেরে ফিরবেন। বাবার কথা না রাখতে পারলেও বাবাকে ওশিন কথা দিয়েছিলেন, তিনি ফিরে এসে মাঘে সংক্রান্তি উদ্যাপন করবেন। কিন্তু নিয়তি তা হতে দিল না।
ওশিনের বাড়িতে উৎসবের আয়োজন চলছিল, ঠিক সেই সময় এই বিমান দুর্ঘটনার খবর পান তাঁর বাবা। নেপালের সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিলে চোখের জল থামাতে পারছিলেন না প্রৌঢ়।
গত দু’বছর ধরে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের সঙ্গে কাজ করছিলেন ওশিন। তিনি নেপালের চিৎওয়ান জেলার বাসিন্দা। কর্মসূত্রে কাঠমান্ডুতে থাকছিলেন। বাবা, মাকেও নিজের কাছে ডেকে নিয়েছিলেন ওশিন। তাঁর বাবা ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। দুই বোন এবং এক ভাই আছে ওশিনের। তাঁর স্বামী কাজের সূত্রে থাকেন ব্রিটেনে।
নেপালের অক্সফোর্ড কলেজ থেকে পড়াশোনা করেন ওশিন। উচ্চশিক্ষা ভারতে। তার পর বিমানসেবিকা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ভেঙে পড়েছে ওশিনের পরিবার। তাঁর বাবা এবং মা গিয়ে মেয়ের মৃতদেহ শনাক্ত করে এসেছেন।
রবিবার সকালে ৭২ জনকে নিয়ে পোখরা বিমানবন্দরে নামার আগে ভেঙে পড়ে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমান। সেতি গন্ডকি নদীর ধারে বিমানটি ভেঙে পড়ে, মাটি ছোঁয়ার মাত্র ১০ সেকেন্ড আগে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ৬৮ জনের দেহ। তবে বিমানে যাঁরা ছিলেন, সকলেরই মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা।