কয়েকদিন আগেই বাবুঘাটে গঙ্গা আরতি করা নিয়ে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পুলিশকে রীতিমতো ঘোল খাইয়ে নিজের বলা কথা রেখে গঙ্গা আরতি করে দেখিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আজ ব্যরাকপুরের ভাটপাড়ায় বিরাট মঞ্চ তৈরি করে গঙ্গা আরতির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দুদের ধর্মাচরণে বাধা দেওয়ার অভিযোগে সরব হন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, যদি কোনো মুসলিমের রাস্তায় বসে নমাজ পড়তে অনুমতির প্রয়োজন না হয় তাহলে কোনো হিন্দুর গঙ্গা আরতির জন্য অনুমতির কেন প্রয়োজন?
এদিন ব্যরাকপুরে গঙ্গা আরতির কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে কলকাতার বাবুঘাটে গঙ্গা আরতি করার ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, গঙ্গাসাগরের আগে ১১ই জানুয়ারি বঙ্গ বিজেপির উদ্যোগে গঙ্গা আরতির ব্যবস্থা করা হলেও পুলিশ অনুমতি দেয়নি। ওইদিন মঞ্চ খুলতে শুরু করেছিল পুলিশ। সুকান্ত মজুমদার প্রশ্ন তোলেন, “আমি প্রশ্ন করি অন্য যে ধর্মাবলম্বী মানুষরা ভারতবর্ষে রয়েছে তাদেরকে যদি ধর্মাচারণ করতে হয় তা হলে তাদের অনুমতির প্রয়োজন পড়ে? কোনো মুসলিমের যদি রাস্তায় বা প্ল্যাটফর্মে নমাজ পড়তে কোনো অনুমতির প্রয়োজন না হয় তাহলে কোনো সুকান্ত মজুমদার অথবা কোনো হিন্দুর গঙ্গা আরতি করার জন্য কোনো পারমিশনের প্রয়োজন নেই।”
আজ সুকান্ত মজুমদার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, কিছু দিন আগেই তিনি জানতে পেরেছেন, বাঁশবেড়িয়ার কাছে ত্রিবেণীতে বহু বছর আগে কুম্ভ স্নানের ব্যবস্থা ছিল। যা ৭০০ বছর আগে বন্ধ হয়ে যায়। তার কথায় হিন্দুরা নিজেদের সংস্কৃতি রক্ষার লড়াই চালিয়ে আসছে। সেই লড়াইয়ের একটা ফল আজ অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ হচ্ছে। তার কথায়, “যে জাতি নিজের ইতিহাস মনে রাখে না সে জাতিকে কেউ মনে রাখে না।” তার আহ্বান হিন্দুদের নিজের সংস্কৃতি রক্ষার লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, “নিজের ধর্ম এবং সংস্কৃতি রক্ষার জন্য কেউ যদি আমায় সাম্প্রদায়িক বলে, বলতেই পারে। আমি নিজের ধর্ম এবং নিজের সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য একশো বার সাম্প্রদায়িক হব।” তাঁর দাবি, ভারতবর্ষের যে অংশ থেকে গঙ্গা-গো মাতা গীতা সরে গেছে সেই অংশ ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেই অংশ আর ভারতের বলে মনে করা হয় না।
আজ বক্তব্য রাখতে গিয়ে, পুলিশ প্রশাসন ও তৃণমূলের নেতা কর্মীদের রামায়ণের রাক্ষসের তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, রামায়ণে দেখা গেছে যখন ঋষি মুনিরা যজ্ঞ করতে বসতেন তখন সেটা ভন্ডুল করতে রাক্ষস খক্ষোসের দল হামলা করত। আর রামায়নে সেই রাক্ষসই এখন খাঁকি অথবা সাদা ড্রেস পরে আসে। তাদেরকে পাঠানো হয় হিন্দুদের গঙ্গা আরতি বন্ধ করার জন্য। সুকান্ত মজুমদারের দাবি, বাংলায় হিন্দু সংস্কৃতির জাগরণ না হলে এই বাংলাকে রক্ষা করা সম্ভব নয়।