অনুব্রত মন্ডলকে দিল্লি দর্শন করাবোই। আজ বাঁকুড়ার ২নং ব্লকের আঁকুরাবাধে এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
সম্প্রতি গরু পাচার কান্ডে সমগ্র রাজ্য তোলপাড়। ব্যাকফুটে তৃণমূল। গরু পাচার মামলায় বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনু্ব্রত মণ্ডল এই মুহূর্তে আসানসোল কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি। বরবারই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির নিশানার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন কেষ্ট। সোমবার জেলবন্দি নেতাকে আরও একবার তীব্র আক্রমণ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
সোমবার দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার বাঁকুড়া-২ মণ্ডলের ডাকে আঁকুড়াবাদ কালী মন্দির সংলগ্ন মাঠে ‘পঞ্চায়েত কর্মী সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় বক্তব্য রাখেন সুকান্ত মজুমদার। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বালুরঘাটের সাংসদ বলেন, ‘অনুব্রত মণ্ডলকে আমরা দিল্লি দর্শন করাবোই।’ দীর্ঘদিন ধরে অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা করেছে ইডি। দিল্লির রাইস এভিনিউ কোর্টের নির্দেশের পর বীরভূমের তৃণমূল কর্মী খুনের চেষ্টার মামলায় কেষ্টর দিল্লি যাত্রায় বাধা পড়ে। নতুন করে আবার কেষ্টকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য তেড়েফুঁড়ে নেমেছে ইডি। তখনই সুকান্তর এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
ভারত জোড়ো যাত্রা’ নিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ভূয়সী প্রশংসা শোনা গিয়েছিল তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহার গলায়। আসানসোলের সাংসদের সেই মন্তব্যকে ‘ব্যক্তিগত মতামত’ বলে তৃণমূল এড়িয়ে গেলেও এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, “শত্রুঘ্ন সিনহাকে কি কেউ সিরিয়াসলি নেয়? আপনারা নিচ্ছেন নিন। আবার কখন ‘খামোশ’ বলে দেবে তখন সবাই চুপ করে যাবেন।” বিহারে বন্দে ভারত একপ্রেসে ঢিল ছোড়ার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা’। পাশাপাশি নাম না করে খোঁচা দিয়ে সুকান্ত বলেন, “কিছু মানুষ আছে যারা ভারতবর্ষের উন্নতি সহ্য করতে পারে না। এদেশে থাকে, খায় আর গুণগান গায় অন্য দেশের।”
সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের দুয়ারে সরকার প্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পুরস্কার পেয়েছে। দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিম ভট্টাচার্যের হাতে সেই পুরস্কার তুলে দেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সেই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুকান্ত বলেন, “দুয়ারে সরকার কোনও পুরস্কার পায়নি। দুয়ারে সরকার ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের বিষয়টি পুরস্কার পেয়েছে।’ তিনি সমালোচনা করে বলেন, তৃণমূল এতদিন সরকারে থাকার পরও কেন এত মানুষকে দুয়ারে সরকারের লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে?”
সম্প্রতি বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ ‘দিদির দূত’দের গাছে বেঁধে রাখার নিদান দিয়েছিলেন। এদিন দিলীপের মন্তব্যকে কার্যত স্বীকৃতি দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “মানুষ ভূত দেখলে তো বেঁধে রাখবেই। দূত বা ভূত হিসেবে যারা যাবে তারা তো অনেকেই চাকরি বা আবাস যোজনার নামে টাকা নিয়েছে। গ্রামের মানুষ বেঁধে তো রাখবেই।”