মুঘলদের কট্টর শত্রু ছিলেন হিন্দু রাজা বাপ্পা রাওয়াল! আরবের সীমায় ঢুকে মেরেছিলেন মুঘলদের।

ধর্মনিরপেক্ষতার আড়ালে ভারতের ইতিহাসকে এমনভাবে বিকৃত করা হয়েছে যা ভারতের হিন্দুদের কল্পনার অতীত। ভারতীয়দেরকে নিজের ইতিহাস সম্পূর্ণভাবে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতীয়দের ইতিহাস বইতে শুধু বাবর, আকবরের কাহিনী পড়ানো হয়। ইতিহাস বইতে পড়ানো হয় মুঘলরা এসেছিল এরপর ইংরেজরা এসেছিল। তারপর ভারত স্বাধীন, ব্যাস ইতিহাস শেষ। বিশ্বের সবথেকে প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস সম্পর্ক এ সঠিক জ্ঞান এখন খুব কম ভারতীয়র কাছেই আছে। এমনকি মুঘলদের কিভাবে ভারতীয়রা তাড়িয়ে ছিল তাও ইতিহাস বইতে সঠিকভাবে বলা হয় না। ভারতের ইতিহাস সম্পর্কে একজন ভারতীয় যা না জানে তার থেকে অন্যদেশের লোকজন বেশি জানে। কারণ ভারতে যে ইতিহাস পড়ানো হয় তার পুরোটাই বিকৃত। ভারতীয়দের পূর্বপুরুষদের বীর গাঁথা লুকিয়ে রাখা হয় কারণ ভারতীয়রা আসল ইতিহাস জানলে আবার ভারতের বুকে লক্ষ লক্ষ বীর তৈরি হয়ে যেতে পারে।

ভারতের এক মহান বীর রাজা সম্পর্কে আজ আমরা পাঠকদের জানাবো যা পাঠ্যপুস্তকের ইতিহাস বইতে পাওয়া যাবে না। ঘটনা ৭০০ খ্রিস্টাব্দের আশেপাশের যখন মহম্মদ বিন কাশিম সিন্ধের মুলতান, ব্রাহ্মহনাবাদ এলাকায় কব্জা করে নেয়। রাজা দহীরকে হারানোর পর হিন্দুদের ছোট ছোট সেনা কাশিমকে আটকাতে পারেনি। মহম্মদ বিন কাশিম সিন্ধে কব্জা করার পর সেখানের মহিলাদের আরবে বিক্রি করতে শুরু করে। একইসাথে সিন্ধের মন্দির ভাঙতে শুরু করে। গাই, গরুকে রাস্তায় এনে কাটতে শুরু করে আরবি জিহাদিরা। সিন্ধে অধর্ম ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে সিন্ধ ছেড়ে পলায়ন শুরু করে। এর মধ্যে কিছু মানুষ পৌঁছে যায় মেবাড়, যেখানে এক মহান হিন্দু রাজার রাজ ছিল। সেই রাজার নাম ছিল বাপ্পা রাওয়াল। প্রথমত জানিয়ে দি বাপ্পা রাওয়াল একজন মহান পরাক্রমী রাজা ছিলেন যার সাথে লড়াই করার অর্থৎ ছিল নিজের নিজের বিনাশ ডেকে আনা। বাপ্পা রাওয়াল শাকাহারী ভোজন করতেন এবং মহাকালের পরম ভক্ত ছিলেন। হরিৎ ঋষির আশীর্বাদে মাত্র ২০ বছর বয়সে উনি মোর্য শাসকদের হারিয়ে মেবাড়ের রাজকার্য সামলে ছিলেন।

মহম্মদ বিন কাশিমের অত্যাচারে সিন্ধ থেকে পালিয়ে আসা কিছু মানুষের থেকে বাপ্পা রাওয়াল সেখানের মানুষের দুঃখ কষ্ট জানতে পারেন। বাপ্পা রাওয়াল জনগণের উপর অত্যাচার ও মহিলাদের সন্মান হরনের কথা শুনে প্রচণ্ড ক্রোধিত হয়ে পড়েন।  শিবালয় ও মন্দির ভাঙার কথা শুনে উনি নিজের সেনাপতি ও মন্ত্রীদের উদেশ্য করে বড়ো ঘোষণা করেন। বাপ্পা রাওয়াল বলেন, “আমাদের কেল্লা কেউ যদি জয় করে তাতে শুধু আমাদের মাথা ঝুঁকে যায়, কিন্তু আমাদের মন্দিরে কেউ ভাঙলে সেটা অধর্মের জয়। আমি থাকতে সেটা হতে দিতে পারি না।” এরপর বাপ্পা রাওয়াল সিন্ধকে অধর্ম থেকে মুক্তি দিতে বিশাল সেনা নিয়ে পৌঁছে যায় সিন্ধদেশ। মুখে হর হর মহাদেব শ্লোগান, হাতে গেরুয়া পতাকা নিয়ে সিন্ধ দেশে হাজির হয় বিশাল সেনা।

বাপ্পা রাওয়াল এর সেনা যেন নিজের শক্তি প্রদর্শনের কোনো সুযোগ খুঁজছিল। এক একজন সেনা ১০ জন আরবীকে বধ করতে শুরু করে। মহম্মদ বিন কাশিম বিশাল সেনার শক্তি দেখে ভয়ভীতি হয়ে পড়ে এবং জলপথে আরবি হাজাজ এর কাছে পলায়ন করে। আরবি হাজাজকে কাশিম সব কথা বলে। এদিকে বাপ্পা রাওয়াল দেখেন যে আরবি সেনা পলায়ন করে আরবের দিকেই। বাপ্পা রাওয়াল আরবিদের তাড়িয়ে বেলুচিস্তান পার করিয়ে দেয়। যারপর আবার পুরো ভারতে শান্তি আসে এবং সনাতন ধর্মের প্রকাশ ঘটে। বাপ্পা মেবাড়ে ফিরে আসে এবং রাজত্ব করতে থাকে। এরমধ্যে আরবি হাজাজ হারের বদলা নেওয়ার জন্য বিশাল আরবি সেনার নির্মাণ করে এবং দু তরফা হামলা করে। একদিকে মেবাড়ে হামলা অন্যদিকে জয়সেলমেরে হামলা করে আরবি জেহাদি সেনা। বাপ্পা রাওয়াল দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে প্রত্যাঘাত করে। বাপ্পা রাওয়াল তার সেনা নিয়ে হাজাজ এর সীমায় ঢুকে পড়ে। এদিকে নাগভট্ট-প্রথম পশ্চিম প্রান্ত থেকে আরবীদের রক্ত স্নান করিয়ে দেয়।

এরপর বাপ্পা রাওয়াল মহা সেনা নির্মাণ করার সিধান্ত নেয় এবং আশেপাশের রাজাদের সেনাকে সম্মিলিত করে যাতে আরবিদের সঠিক শিক্ষা দেওয়া যায়। নাগভট্ট, বিক্রমাদিত্য দ্বিতীয় এবং অন্যান্য রাজাদের সেনা নিয়ে হিন্দুদের মহাসেন নির্মাণ করে। সেই মহাসেনা নিয়ে বাপ্পা রাওয়াল আরবের দিকে রওনা দেন। আরবে হিন্দু মহাসেনার প্রথম আক্রমন আল-হাকাম বিন আলাবার উপরে করা হয়। সেখানে গেরুয়া পতাকা স্থাপনের পর তামিম-বিন-জেয়েদ,জুনেদ বিন আব্দুল আল নুরির উপর আক্রমণ করা হয়। আরবের যে রাজ্যগুলি থেকে ভারতে আক্রমন করা হতো সেখানে গেরুয়া স্থাপিত করে দেওয়া হয়। তবে শত্রুদের ধূলিসাৎ করার পর বাপ্পা রাওয়াল সেখানে রাজত্ব করেননি। কারণ হিন্দু রাজা কখনোই বিদেশের মাটিতে কব্জা করতো না। এরপর এই মহাসেনা গজনীর দিকে অগ্রসর হয়।

গজনীর শাসক সেলিম-আল-হাবিবকে শেষ করে দেয় মহা সেনা। এরপর প্রায় ৪০০ বছর আরবের জেহাদীরা ভারতে আক্রমন করার সাহস পায়নি। বলা হয় পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি শহরের নাম বাপ্পা রাওয়াল এর নাম অনুযায়ী দেওয়া হয়েছিল। বাপ্পা রাওয়াল এর মত মহান হিন্দু রাজার এদেশে পূজো হওয়া উচিত। কিন্তু হিন্দুরা নিজেদের পুর্বপুরুষ সম্পর্কে অবগত নয়। তাই বাবর আর আকবরের জেহাদী কাহিনী শুনে, নিজেদের গোলাম মনে করে ঘুমিয়ে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.