ধনখড়-লাইনে গেলেন না নতুন রাজ্যপাল বোস, শিক্ষা দফতরের মাধ্যমেই বৈঠকে ডাক উপাচার্যদের

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে এর আগে পূর্বতন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে বার বার সংঘাতে জড়িয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সিভি আনন্দ বোস রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নেওয়ার পর থেকে নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের দূরত্ব ক্রমেই কমেছে। এ বার উপাচার্যদের সঙ্গে দূরত্বও মিটিয়ে ফেলতে উদ্যোগী রাজ্যপাল। আগামী ১৭ জানুয়ারি রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বৈঠকে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানালেন রাজ্যপাল বোস। রাজ্য সরকারের চালু করা নীতি মেনে রাজভবনের তরফে শিক্ষা দফতরে পাঠানো হয়েছে আমন্ত্রণপত্র।

পরের দিন, ১৮ জানুয়ারিও রাজভবনে বৈঠকের ডাক দিয়েছেন রাজ্যপাল। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদের জন্য যে তিন জনের নাম সুপারিশ করা হয়েছিল, তাঁদের সঙ্গেও আলাদা করে রাজভবনে কথা হবে তাঁর। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য এখন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে জেলে রয়েছে। তাঁর জায়গায় ওই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ওমপ্রকাশ মিশ্র। ওই পদেই স্থায়ী নিয়োগের জন্য বৈঠকে বসবেন রাজ্যপাল।

রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৭ জানুয়ারি সকাল ১১টায় উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন রাজ্যপাল। ২০১৯ সালে রাজ্য সরকার নিয়ম করেছিল যে, রাজভবন সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে না। উপাচার্যরাও রাজভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন না সরাসরি। শিক্ষা দফতরের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে হবে। সেই নিয়ম মেনেই এ বার বৈঠক হতে চলেছে। শিক্ষা দফতরে ইতিমধ্যেই আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে গিয়েছে।

রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যপালের ডাকে সাড়া দিয়ে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাই বৈঠকে যোগ দিতে যেতে পারেন। উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত যে মামলা হাই কোর্টে চলছে, সেটাও কথা বলে বুঝে নিতে চান নতুন রাজ্যপাল। ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে হাই কোর্টে মামলা চলছে। সে বিষয়েও ১৭ জানুয়ারি আলোচনা হতে পারে।

এর আগে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বার বার সংঘাতে জড়িয়েছে নবান্ন এবং পূর্বতন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। টুইট করে তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন বার বার। গত বছর জানুয়ারি মাসে টুইট করে রাজ্যপাল সরাসরি অভিযোগ করেছিলেন যে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয়নি। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে আইনের শাসন নয়, ‘শাসকের আইন’ চলছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যয়ের দ্বিতীয় দফার নিয়োগের ক্ষেত্রেও আইন মানা হয়নি বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এ বার সেই সংঘাতের আবহকে পিছনে ফেলে উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন বোস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.