সুকান্তর বালুরঘাটে শুভেন্দু, রাজ্য বিজেপির দুই মুখ বক্তৃতায় একে অপরকে কত নম্বর দিলেন

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের পাড়ায় ‘অতিথি’ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার বালুরঘাট শহরে মিছিল এবং জনসভা ছিল বিজেপির। সেখানেই এক মঞ্চে দেখা গেল রাজ্য বিজেপির দুই কুশীলবকে। দু’জনের গলাতেই পরস্পরের সম্পর্কে শোনা যায় প্রশংসাসূচক নানা কথা।

বালুরঘাট লোকসভা আসন থেকেই সাংসদ সুকান্ত। তাঁর বাড়িও বালুরঘাট শহরে। সুকান্ত রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে এই প্রথম বার বিরোধী দলনেতা গেলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা শহরে। স্বাভাবিক ভাবেই স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ভাবে সুকান্তেরও আগ্রহ ছিল মঙ্গলবারের কর্মসূচি ঘিরে। তিনি শুভেন্দুকে তাঁর বাড়িতেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তবে মঙ্গলবাই সদ্য পিতৃবিয়োগ হওয়া তপনের বিধায়ক বুঝুরাম টুডুর বাড়িতে যাওয়ার পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল শুভেন্দুর। সেই কারণে সুকান্তের বাড়িতে না গেলেও শুভেন্দু বিজেপির জেলা কার্যালয়ে যান। প্রসঙ্গত এই কার্যালয় থেকেই সুকান্তের রাজনীতিতে অভিষেক হয়। মঙ্গলাবর সেখানে সুকান্ত, শুভেন্দু ছাড়াও হাজির ছিলেন বালুরঘাটের বিধায়ক অশোক লাহিড়ি।

সুকান্ত-শুভেন্দুর মধ্যে কোনও প্রকাশ্য বিরোধিতা দেখা না গেলেও গেরুয়া শিবিরের অনেকেই মনে করেন সম্পর্কটা একেবারে মসৃণ নয়। তবে মঙ্গলবার তার কোনও আঁচ পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার বালুরঘাটে জেলাশাসকের অফিসের সামনে হয় বিজেপির সভা। সেই সময়ে মঞ্চে সুকান্ত এবং শুভেন্দুকে বেশ কিছু ক্ষণ একান্তে কথা বলতে দেখা যায়। হাসতে হাসতে সুকান্তের কানে কানেও অনেক কথা বলেন শুভেন্দু। তা শুনে পাল্টা হাসিতে ভরে ওঠে সুকান্তের মুখও। বিজেপি সূত্রে জানা যায়, বালুরঘাট শহর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ইতিহাস এবং গেরুয়া শিবিরের সংগঠন নিয়ে কথা হয় রাজ্য বিজেপির দুই প্রধান নেতার মধ্যে। শুভেন্দুর বক্তৃতাতেও আলাদা করে সুকান্তের কথা এসেছে মঙ্গলবার। শুরুতে সুকান্তের পরিচয় উল্লেখ করতে শুভেন্দু বলেন, ‘‘এই কর্মসূচির মধ্যমণি, বিজেপির রাজ্যের জনপ্রিয় সভাপতি তথা বালুরঘাটের লোকপ্রিয় সাংসদ, শিক্ষাবিদ।’’ এর পর বক্তৃতার শেষ দিকে তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার সুরে সুকান্তের নাম মেলান শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘বড় ডাকাতকে আমি আর সুকান্ত মজুমদার মিলে ধরে জেলে ঢোকাব।’’

শুভেন্দুর কথার অনুরণন শোনা গিয়েছে সুকান্তর গলাতেও। বক্তৃতার শুরুতে নন্দীগ্রামের বিধায়কের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘সম্মাননীয় বিরোধী দলনেতা, যিনি বিধানসভা নির্বাচনের পর এই প্রথম বার আমাদের জেলায় প্রথম এসেছেন, তাঁকে হাততালি দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছি।’’ বক্তৃতার মাঝে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে ‘শুভেন্দুদা’ বলেও সম্বোধন করতে শোনা যায় সুকান্তকে। আবার অতীতে দু’জনে উপস্থিত ছিলেন এমন যৌথ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের স্মৃতিও তুলে ধরেন বালুরঘাটের সাংসদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.