ক্রমে প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে আমেরিকার পরিস্থিতি। ‘সাইক্লোন বোমা’ বা তুষারঝড়ে বিধ্বস্ত গোটা দেশ। এমনকি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের একটি বিস্তীর্ণ অংশ প্রবল ঠান্ডায় প্রায় জমে গিয়েছে।
আমেরিকার জাতীয় আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, দেশে উদ্ভূত পরিস্থিতি ইতিহাসে বিরল। তা অতীতের সমস্ত শীতের রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে। পশ্চিম কানাডায় ইতিমধ্যে তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছে হিমাঙ্কের ৫৩ ডিগ্রি নীচে। এ ছাড়া, মিনাসোটার তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ৩৮ ডিগ্রি নীচে, ডালাসের পারদ নেমেছে হিমাঙ্কের ১৩ ডিগ্রি নীচে।
তুষারঝড়ের কারণে আমেরিকার রাস্তায় পুরু বরফের আস্তরণ জমে গিয়েছে। কোথাও কোথাও তার উচ্চতা ৮ থেকে ১০ ফুট। যার ফলে দেশে যোগাযোগ ও পরিবহণ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। এখনও পর্যন্ত ১৫ হাজার বিমান বাতিল করতে হয়েছে। বিদ্যুৎ পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে আমেরিকার কোনায় কোনায়। প্রায় ২ লক্ষ মানুষ বিদ্যুৎহীন ভাবে বাস করছেন। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।
আবহবিদরা জানাচ্ছেন, এই পরিস্থিতিতে যতটা সম্ভব বাড়ির ভিতর থাকতে হবে। তীব্র ঠান্ডায় বাইরে বেরোলে তুষারক্ষত, এমনকি প্রাণহানির সম্ভাবনাও রয়েছে। কারণ তুষারপাতের পাশাপাশি আমেরিকায় অনবরত চলছে ঝোড়ো হাওয়া। কনকনে ঠান্ডা সেই হাওয়া যেন চাবুক মারছে শরীরে।
বড়দিনের সময় টানা ৫ দিন ধরে প্রবল তুষারঝড়ের সাক্ষী থেকেছে আমেরিকা। তার পর থেকেই আবহাওয়ার পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়িয়েছে। তীব্র এই তুষারঝড়কেই বলা হচ্ছে ‘সাইক্লোন বোমা’। ইতিমধ্যে ঠান্ডায় ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে আমরিকার বিভিন্ন প্রান্তে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
আবহাওয়ার এই পরিস্থিতির মাঝে উদ্ধারকার্য চালিয়ে যাচ্ছে দেশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। কখনও গাড়ির ভিতর থেকে, কখনও বা বরফের আস্তরণের নীচ থেকে মিলছে মৃতদেহ। আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও কয়েক ইঞ্চি তুষারপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আমেরিকার হাওয়া অফিস।