করোনা রোধে বুস্টার হিসেবে ন্যাজাল টিকার সুপারিশ বিশেষজ্ঞ প্যানেলের, সংসদে এমনটাই জানাল কেন্দ্র। ভারতের টিকাকরণ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সুপারিশ অনুযায়ী, কোভিড রোধে বুস্টার ডোজ হিসেবে ভারত বায়োটেকের তৈরি ন্যাজাল টিকা দেওয়া উচিত দেশের প্রাপ্ত বয়স্কদের। সংসদে এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। বিষয়টির সঙ্গে অবগত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের উচ্চ পদস্থ কর্তারা জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই ন্যাজাল টিকা বাজারে আসতে পারে। ভারত বায়োটেকের তৈরি ‘iNCOVACC’ নামক ন্যাজাল টিকাটি ইতিমধ্যেই দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে। এই আবহে করোনা রোধে ভারতের হাতে আরও এক অস্ত্র সামিল হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সাধারণত নাক দিয়েই প্রথম করোনা ভাইরাস কোনও রোগীর শরীরে প্রবেশ করে। ভারত বায়োটেকের ‘iNCOVACC’ নামক টিকাটি সেই নাক দিয়েই দেওয়া হয়। এই প্রতিষেধক প্রয়োগ সহজ। এই আবহে বিশেষজ্ঞদের আশা, এই টিকার কার্যকারিতা ইতিবাচক ফল আনবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে বুস্টার নিয়ে অনীহা দূর হবে। এই আবহে রাজ্যসভায় মনসুখ মাণ্ডব্য বৃহস্পতিবার বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতের জন্য তৈরি রয়েছি। আজই ন্যাজাল টিকাকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এবার আর সুরক্ষিত থাকতে ইনজেকশন নিতে হবে। নাকে মাত্র এক ফোঁটা টিকা, এবং কোভিড থেকে সুরক্ষিত হবে দেশবাসী।’ এদিকে ন্যাজাল টিকার পরীক্ষা সংক্রান্ত কোনও তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক NTAGI-র এক সদস্য দাবি করেছেন, ন্যাজাল টিকার পরীক্ষার ফলাফল খুবই আশাব্যঞ্জক।
সরকারি হিসেব বলছে, দেশের ৯৪ কোটি প্রাপ্ত বয়স্কের মধ্যে ৭১.৯ কোটি জন এখনও বুস্টার ডোজ নেননি। এদিকে ৭.৫ কোটি জন এখনও করোনার দ্বিতীয় ডোজই নেননি। এদিকে চিনের করোনা ঝড়ে উদ্বেগ বেড়েছে অতিমারি নিয়ে। সংক্রমণের আতঙ্কে আচমকা যদি কোভিডের বুস্টার ডোজের চাহিদা বৃদ্ধি পায়, তাহলেও চিন্তার কোনও কারণ দেখছে না কেন্দ্র। সরকারের দাবি, রাজ্যগুলির কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে টিকা মজুত রয়েছে। এই বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা বললেন, ‘একই সঙ্গে সবাইকে টিকা দেওয়া তো সম্ভব হবে না। তবে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। আমাদের হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকা রয়েছে। টিকাদানের হারের ওপর ভিত্তি করে আমরা আরও টিকার অর্ডার দেব।’ সূত্রের দাবি, এখন সরকারের হাতে প্রায় ২ কোটি করোনা টিকার ডোজ রয়েছে। তবে সমস্যা হল, সাধারণ মানুষের মধ্যে বুস্টার ডোজ নেওয়ার ইচ্ছেটা কম। এদিকে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত কোভিড পর্যালোচনা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর আধিকারিকদের নির্দেশ দেন যাতে সাধারণ মানুষকে টিকার তৃতীয় ডোজ নিতে উৎসাহিত করা হয়।