কোভিডের দ্বিতীয় স্ফীতি গোটা বিশ্বে হাহাকার সৃষ্টি করেছিল। সংক্রমণের মাত্রা আকাশছোঁয়া, মৃত্যুর তালিকাটাও ছিল বেশ দীর্ঘ। সম্প্রতি চিনে আবার করোনার বাড়বাড়ন্তে ফের সেই স্মৃতি উস্কে উঠছে। হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ। যার নেপথ্যে রয়েছে কোভিডের উপরূপ বিএফ.৭। গত অক্টোবরে এই উপরূপের দাপট ছিল আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলিতে। ওই সময় আমেরিকার মোট সংক্রমণের ৫ শতাংশ এই উপরূপে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ব্রিটেনে ৭.২৬ শতাংশ।
কোভিডের এই উপরূপ এ বার চিনেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। যার জেরে সংক্রমণের মাত্রা এক লাফে বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি দেখে চিনের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ আশঙ্কা করছেন যে, আগামী বছরে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা যেতে পারেন। সেই চিন্তা বহু গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে ওমিক্রনের বিভিন্ন রূপের সঙ্গে লড়াই করার জন্য চিনে টিকার প্রতিরোধ ক্ষমতার মানোন্নয়ন না করার বিষয়টি। যার জেরে সংক্রমণের মাত্রা বাড়ছে বলে দাবি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চিনে সংক্রমণের মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে বেড়েছে হাসপাতালগুলিতে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যাও। আইসিইউগুলি রোগীদের ভিড়ে উপচে পড়ছে। যদিও চিনের তরফে বিষয়টিকে অস্বীকার করার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) অধির্কতা (ইমারজেন্সি) মাইক রায়ান বুধবার বলেন, “আইসিইউতে ভর্তির সংখ্যা খুবই কম বলে দাবি করছে চিন। কিন্তু বাস্তবে হাসপাতালের আইসিইউগুলি ভরে গিয়েছে কোভিড রোগীতে। এটা বলছি না যে, চিন ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাদের এই তথ্য দিচ্ছে না। তারা হয়তো বিষয়টিকে আয়ত্তে আনতে পারছে না।”
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, বেজিংয়ের বহু বাসিন্দা তাঁদের আত্মীয়ের দেহ সৎকারের জন্য শ্মশানগুলিতে ভিড় জমাচ্ছেন। সেখানেও তাঁদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কারণ শ্মশানগুলিতেও লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছে। কোভিডবিধি তুলে নেওয়ার পর থেকেই চিনে সংক্রমণের মাত্রা বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মৃত্যুও। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বেজিং, চংকিং এবং গুয়াংঝৌয়ের শ্মশানগুলিতে স্বাভাবিকের তুলনায় ভিড় অনেক বেশি। তবে শ্মশানগুলিতে কোভিডে মৃতের সংখ্যাই বেশি কি না সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। কারণ শ্মশানের কর্মীরা সে বিষয়ে মুখ খোলেননি।