বিরতিতে সৌদি আরবের কোচ হার্ভে রেনার্ড যা করেছিলেন, ফাইনালে প্রায় একই কাজ করেন কিলিয়ান এমবাপে (Kylian Mbappe)।বিশ্বকাপে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে অভিযান শুরু করেছিল আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচের প্রথমার্ধে এক গোলে এগিয়েছিল নীল-সাদা জার্সিধারীরা। পেনাল্টি থেকে গোল করেছিলেন মেসি। হাফ টাইমে রেনার্ড উদ্দীপ্ত ভাষ দিয়েছিলেন। ছেলেদের বলেছিলেন, ”তোমরা কি মেসির সঙ্গে সেলফি তুলতে এসেছ?” তার পরের ঘটনা ইতিহাস। দ্বিতীয়ার্ধে সৌদির প্রত্যাবর্তনে আর্জেন্টিনা হেরে যায়।
ফাইনালে প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনার আক্রমণে উড়ে যায় ফ্রান্স। বিরতির সময়ে আর্জেন্টিনা এগিয়েছিল ২-০ গোলে। দলের এই অসহায় আত্মসমর্পণ দেখে সহ্য করতে পারেননি কিলিয়ান এমবাপে। ড্রেসিং রুমে ঢুকে ফেটে পড়েন ক্ষোভে। রাগে নিজের জার্সি ছুঁড়ে ফেলে দেন। তার পরে সতীর্থদের উদ্দেশ্য করে এমবাপেকে বলতে শোনা যায়, ”আমরা এত হতশ্রী ফুটবল খেলতে পারি না। মাঠে নেমে বোকার মতো ফুটবল খেলা বন্ধ কর।”
মঙ্গলবার একটি ফরাসি টিভি চ্যানেলে ফাঁস হয় ড্রেসিং রুমের ভিতরের কথা। সেই ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে এমবাপে বলছেন, ”এটা বিশ্বকাপ ফাইনাল। এটা জীবনের ম্যাচ। আমরা কখনওই খারাপ খেলতে পারি না। ওরা দু’ গোলে এগিয়ে রয়েছে। মাঠে নেমে নিজেদের সেরাটা দাও, বোকার মতো ফুটবল খেলা বন্ধ কর। আরও তীব্রতা নিয়ে খেল, সবটা দিয়ে দাও।” এর পর এমবাপেকে আরও একবার বলতে শোনা যায়, ”আমরা দু’ গোলে পিছিয়ে রয়েছি। কিন্তু আমরা এখনও বিশ্বকাপ জিততে পারি। চল মাঠে নেমে নিজেদের উজাড় করে দিই। চার বছরে এমন সুযোগ পাওয়া যায়।”
এমবাপে যখন ক্ষিপ্ত, তখন কোমরে হাত দিয়ে হাঁটতে দেখা যায় ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশঁকে (Didier Deschamp)। এমবাপে থামলে তিনি শুরু করেন। ছেলেদের উদ্দেশে বলেন, ”আমি রাগ না করেই বলছি, দুটো দলের মধ্যে পার্থক্য কী জানো? ওরা বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলছে। আর আমরা সেটা খেলছি না। এটাই যা পার্থক্য। প্রথমার্ধ আমাদের শক্তি, আমাদের ক্ষমতার প্রতিফলন নয়। আমাদের কোয়ালিটি রয়েছে, ক্ষমতা আছে, চারিত্রিক দৃঢ়তা রয়েছে। আমি এটা পছন্দ করি। হারলে চলবে না। খুব দ্রুত সব শেষ হয়ে গিয়েছে। এখনও সময় আছে। শেষ পর্যন্ত নিজেদের উপরে বিশ্বাস রাখতে হবে।”
বিরতির পরের ঘটনা ইতিহাস। কিলিয়ান এমবাপে ফ্রান্সকে ম্যাচে ফেরান। এক্সট্রা টাইমে মেসির গোলে আর্জেন্টিনা এগিয়ে যাওয়ার পরেও এমবাপে ফ্রান্সকে রক্ষা করেন গোল দিয়ে। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ফ্রান্সের যাবতীয় প্রতিরোধ থেমে যায়। মেসিরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়।