২৫০০ বছর ধরে সমাধান হয়নি, পাণিনির সেই সংস্কৃত ব্যাকরণের সূত্র উদ্ধার কেমব্রিজের গবেষকের

আড়াই হাজার বছর ধরে সংস্কৃত ব্যাকরণের ওই জটিল সূত্র কেউ ধরতে পারেননি। যিশু খ্রিস্টের জন্মের পাঁচশো বছর আগে থেকে সেই সূত্র সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছেন সংস্কৃতের পণ্ডিতেরা। অবশেষে জটিল সেই সূত্রের সমাধান করে ফেললেন ভারতীয় গবেষক-ছাত্র ঋষি রাজপোপাট। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি গবেষণা করছেন। বৃহস্পতিবারই তাঁর গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই রয়েছে ব্যাকরণের সেই জটের সমাধানসূত্র।

পাণিনির ব্যাকরণে ছিল সেই সূত্র। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সংস্কৃত ব্যাকরণের এই সমাধান ‘বৈপ্লবিক’। এর ফলে পাণিনির ব্যাকরণ কম্পিউটারকেও শেখানো যাবে। অর্থাৎ কম্পিউটারের মধ্যে প্রোগ্রাম হিসাবে ভরা যাবে। ঋষি জানিয়েছেন, প্রথম যখন সমাধান পেয়েছিলেন তিনি, মনে হয়েছিল ‘ইউরেকা’। ঠিক গ্রিক আর্কিমিডিসের মতোই। ২৭ বছরের গবেষকের কথায়, ‘‘ন’মাস ধরে সমাধানের চেষ্টা করছিলাম। তার পর হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। কোথাও কোনও সূত্র পাচ্ছিলাম না। এক মাসের জন্য পুরো বই বন্ধ করে দিই। সাইকেল চালিয়ে, রান্না করে, সাঁতার কেটে, প্রার্থনা আর ধ্যান করে গরমের ছুটি কাটাচ্ছিলাম। তার পর কাজে ফিরি। পাণিনির বইয়ের পাতা খুলতেই কয়েক মিনিটের মধ্যে চোখের সামনে ভেসে ওঠে সমাধান। এখনও অনেক কাজ বাকি। তবে সূত্রের বড় অংশ ধরে ফেলেছি।’’

সূত্রের মূল অংশের সমাধান বার করার পর বাকি অংশের জন্যও কম খাটেননি ঋষি। পাণিনি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পাণিনির অসাধারণ মেধা ছিল। তিনি যা তৈরি করেছিলেন, তার তুলনা মানব সভ্যতার ইতিহাসে খুব বেশি নেই। তবে তিনি আশা করেননি যে, তাঁর সূত্রের সঙ্গে আমরা আরও নতুন ভাব জুড়ব। তাই আমরা যতই এই নিয়ে ভাবনাচিন্তা করি, ততই পাণিনির সূত্রগুলো আমাদের এড়িয়ে দূরে সরে যায়।’’

পাণিনির এই সূত্রের সমাধানের ফলে একটি সংস্কৃত শব্দ থেকে হাজার হাজার সঠিক শব্দ তৈরি করা যাবে। খ্রিস্ট জন্মেরও ৫০০ বছর আগে এই ব্যাকরণ লিখেছিলেন পাণিনি। ঠিক যন্ত্রের মতোই সঠিক শব্দ এবং বাক্য গঠন শেখায় সেগুলি। ধাপে ধাপে। অতীতে বহু ভাষা এবং সংস্কৃতিকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে সংস্কৃত। যদিও এখন শুধু মাত্র ভারতে ২৫ হাজার মানুষ এই ভাষায় কথা বলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.