সিবিআই হেফাজতে বগটুই-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যুর পর থেকে ফের উত্তপ্ত রামপুরহাট। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অস্থায়ী শিবিরে রাতারাতি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
রামপুরহাটের যে অস্থায়ী সিবিআই শিবিরে লালনকে রাখা হয়েছিল, সেখানে নতুন করে যাতে কোনও অশান্তি না হয়, তা নিশ্চিত করতে সোমবার রাতেই এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হয়েছে। কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। রামপুরহাটে এসেছেন বেশ কয়েক জন সিবিআই আধিকারিকও। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বীরভূম জেলা পরিষদের তরফে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিস্থিতি বেশ থমথমে।
বগটুই গ্রামে আগে থেকেই পুলিশের শিবির ছিল। সোমবারের ঘটনার পর সেখানেও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা। বগটুইতে নিহতদের বাড়ির সামনে নতুন করে যাতে কোনও বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতে আলাদা করে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে পরিবারকে। মঙ্গলবার লালনের দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। তার পর দেহ তুলে দেওয়া হবে পরিবারের হাতে।
রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে পর পর কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে বাসিন্দাদের পুড়িয়ে মারা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত লালনকে কিছু দিন আগেই গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। ঝাড়খণ্ডের পাকুড় এলাকার একটি বাড়ি থেকে ধরা পড়েন লালন। তার পর অস্থায়ী শিবিরে রেখে তাঁকে জেরা করা হচ্ছিল। সিবিআই জানিয়েছে, সোমবার বিকেল ৪টা বেজে ৫০ মিনিট নাগাদ অস্থায়ী শিবিরের শৌচাগার থেকে লালনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর গলায় লাল রঙের একটি গামছা জড়ানো ছিল। লালন আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
অন্য দিকে, লালনের পরিবার সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছে। তাঁর পরিবার জানিয়েছে, লালনকে হেফাজতে এতই মারধর করা হয়েছে যে, তিনি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছিলেন না। লালনের দেহ সোমবার রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর সময় এলাকায় উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরের সামনে পৌঁছে যান বীরভূম জেলা পুলিশের আধিকারিকরা। তবে এক দিন পরেও রামপুরহাট থমথমে। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে এলাকার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।