বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে কৌশলগতভাবেই ‘NRC’-ইস্যুটি প্রবলভাবে প্রকাশ্যে আনতে চাইছে বিজেপি৷
অক্টোবর মাসে তাই শুধু বাংলায় পুজো উদ্বোধন করতেই আসছেন না অমিত, শহরের NRC নিয়ে একটি সেমিনারও করবেন তিনি। একটি উদ্বাস্তু সংগঠনের অনুষ্ঠানে বক্তব্যও রাখবেন অমিত শাহ। সেখানে শুধু NRC নয়, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিল বা CAB নিয়েও ভাষণ দেবেন অমিত। তবে, এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কোনও সফরসূচি-ই এখনো নিশ্চিত নয়। রাজ্য বিজেপির তরফে প্রস্তুতি তুঙ্গে। আয়োজকরা ধরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সফরসূচি শেষ মুহূর্তে বদল হতে পারে।
যা পরিস্থিতি, নরেন্দ্র মোদী থেকে অমিত শাহ, বিজেপির প্রথমসারির নেতারা সরাসরি বলেছেন, এনডিএ সরকারের পরবর্তী লক্ষ পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জীকরণ চালু করা৷ ভোটের রাজনীতিতে ফলাফলও হাতেনাতে পাওয়া গিয়েছে। লোকসভায় ১৮ টি আন পেয়ে তৃনমূল কংগ্রেসকে ‘কড়া ট্যাকেল’ করতে পেরেছে রাজ্য বিজেপি।
অন্যদিকে, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আইনে পরিণত হলে বাংলাদেশ থেকে আগত হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান শরণার্থীরা ভারতীয় হবেন৷ কৌশলগতভাবে এই বিষয়টিও ভাসিয়ে রেখেছেন অমিত শাহ।
রাজ্য বিজেপি নেতারা NRC – এর ব্যাপারে ‘হোমওয়ার্ক’ শুরু করে দিয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে বাড়ি বাড়ি চটি বই বিলি করে বিজেপি নেতারা বোঝাতে চাইছেন , বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা আফগানিস্থান থেকে আসা মুসলমানরা যেমন বেআইনি অনুপ্রবেশকারী, অন্যদিকে ওই দুই দেশ থেকে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শি, শিখ বা খ্রীস্টানদের মতো ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা হলেন শরণার্থী৷ ভারতের বিজেপি সরকার, প্রতিবেশি দেশ থেকে আসা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেবে৷ কারণ, তাঁরা বিপদের মুখে নিজের দেশ ছেড়ে পালিয়ে পালিয়ে এসেছেন৷
অন্যদিকে মুসলমান অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানো হবে, কারণ সীমান্তের ওপার থেকে রোজগার বা বাসস্থান খুঁজে পেতে, কিংবা কোনও অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েই তারা এদেশে এসেছে।
১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনরার পর পূর্ব পাকিস্তানের জন্ম হয়। ওই দেশে অত্যাচার এবং ধর্মীয় সন্ত্রাসের মুখে পালিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আসেন হিন্দুরা। এরপর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ জন্ম নেওয়ার পরও হিন্দুরা ফের ওদেশ ছাড়তে বাধ্য হন। অসমে বিশেষ NRC এর নিয়ম অনুযায়ী, ১৯৭১ দলের ২৪ মার্চকে তারিখ হিসাবে ধরা হয়েছে। দেখা হয়েছে করা ওই তারিখের আগে ভারতে এসেছে , কারা তার পর এসেছে।