টিএমসিপি করতে না চাওয়ায় শহরে আইনের ছাত্রকে ‘মার’, বিধায়কের সামনেই হেনস্থার অভিযোগ

কলেজে থাকতে গেলে করতে হবে টিএমসিপি। শাসকদলের ছাত্র সংগঠন করতে না চাওয়ায় এক আইনের পড়ুয়াকে মারধরের অভিযোগ উঠল দক্ষিণ কলকাতা আইন মহাবিদ্যালয়ে। বজবজের তৃণমূল বিধায়ক অশোক দেবের সামনেও মা, বাবা-সহ পড়ুয়াকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর সামনে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অশোক। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলেও জানিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি বলে দাবি ওই কলেজের টিএমসিপি নেত্রীর।

টিএমসিপি করতে রাজি না হওয়ায় আইনের প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়াকে মারধরের অভিযোগ। ওই পড়ুয়ার দাবি, সেই অভিযোগ জানাতে পড়ুয়া কসবা থানায় গেলে তাঁকে মিটমাট করে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তার পর কলেজে ফিরে পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা বিধায়ক অশোকের সামনে ওই পড়ুয়াকে আবার মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মারধরের মুখে পড়েন মা, বাবাও। ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা কলেজ চত্বরে।

এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিগৃহীত আইনের পড়ুয়ার অভিযোগ, গত শুক্রবার ক্লাস চলাকালীন তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধাক্কাধাক্কি করা হয়। পড়ুয়ার দাবি, টিএমসিপি করতে রাজি না হওয়াতেই তিনি নিশানায় পড়ে যান। কারণ হিসাবে ওই পড়ুয়ার দাবি, তাঁকে ভাইস প্রিন্সিপাল বলেছিলেন, এই কলেজে কোনও ইউনিয়ন নেই। তার পর কসবা থানায় গিয়ে তিনি এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বুধবার মা, বাবাকে নিয়ে কলেজে আসেন ওই ছাত্র। তাঁর দাবি, সেই সময় কলেজে উপস্থিত ছিলেন পরিচালন সমিতির সভাপতি অশোক। অশোকের সামনেই তাঁকে আবার ইউনিয়নের ‘দাদা-দিদি’রা মারধর করেন। বাঁচাতে ছুটে আসেন তাঁর মা, বাবা। তাঁদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ নিগৃহীত পডুয়ার। বুধবার রাতে আবার গোটা ঘটনা লিখিত ভাবে কসবা থানায় জানিয়েছেন ওই পড়ুয়া।

ভাইস প্রিন্সিপাল নয়না চট্টোপাধ্যায়কে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, কলেজে পঠনপাঠনের পরিবেশ নেই। পরিচালন সমিতির সভাপতি এক তরফা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘পরিচালন সমিতির সহযোগিতা না পেলে আমি এই পদে থাকতে চাই না।’’

এ ব্যাপারে তৃণমূল বিধায়ক অশোক দেব আনন্দবাজার অনলাইনকে জানান, তিনি উপস্থিত থাকার সময়ে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে ঠিক কী হয়েছে তা নিয়ে তিনি খোঁজ নেবেন।

দক্ষিণ কলকাতা আইন মহাবিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট প্রেসিডেন্ট দেবলীনা দাস বলেন, ‘‘টিএমসিপি করার জন্য চাপ দেওয়ার কোনও ঘটনাই ঘটেনি। এখানে কাউকে টিএমসিপি করার জন্য চাপ দেওয়া হয় না। ছেলেটি একটি মেয়েকে বিরক্ত করেছিল। কলেজের অন্য ছাত্ররা তাঁকে বারণ করে। তা নিয়ে গোলমাল হওয়ার পর মিটমাটও হয়ে গিয়েছিল। এখন এ সব কথা কেন বলা হচ্ছে বুঝতে পারছি না।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.