দু’সপ্তাহ আগে এমনই একটি রবিবার উত্তপ্ত হয়েছিল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের জগদ্দল। মাথা ফেটেছিল ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং-এর। তখনই অর্জুন অভিযোগ তুলেছিলেন, ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা তাঁকে খুন করার চেষ্টা করেছেন। বন্দুকের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করেছেন। এই রবিবার জানা গেল, লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা দিল্লিতে ডেকে পাঠাতে পারেন মনোজ বর্মাকে। লোকসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারকে ডাকতে পারেন স্পিকার।
এ ব্যাপারে অর্জুন সিং-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি স্পিকারকে জানিয়েছিলাম। তিনি আমায় বলেছেন, গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।” দ্য ওয়াল-এর পক্ষ থেকে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলে এই প্রতিবেদনে আপডেট করে দেওয়া হবে। লোকসভার কোনও সদস্য হামলার মুখে পড়লে, তাঁর অধিকার আছে স্পিকারকে জানানোর এবং তা অধিবেশনে তোলার। অর্জুনও তাই করেছিলেন।
পর্যবেক্ষকদের মতে, সাংসদের উপর হামলাটাকেই বড় করে দেখাতে চাইছে বিজেপি। তুলে ধরতে চাইছে বাংলার আইনশৃঙ্খলার ‘কঙ্কালসার চেহারা।’ অর্জুনের উপর হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। ব্যারাকপুরের সাংসদকে হাসপাতালে দেখতে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, “বাংলায় হিংসার পরিবেশ দেখে কষ্ট হচ্ছে।”
ঘটনার দিন থেকেই বিজেপি নেতৃত্ব বাংলার পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা আক্রমণ শানিয়েছেন। শ্যামবাজারের ধর্নামঞ্চ থেকে মুকুল রায় বলেছিলেন, “মনোজ বর্মার বিরুদ্ধে যে যে দরজায় ঠকঠকাতে হয়, সব দরজায় যাব।” ইতিমধ্যে মনোজের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন অর্জুন। একই সঙ্গে জানিয়েছেন লোকসভাতেও। জাতীয় স্তরে বিজেপি তুলে ধরতে চাইছে, রাজ্য সরকার ন্যক্কারজনক ভাবে প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। যেখানে সাংসদের উপর হামলাও বাদ যাচ্ছে না। তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?
যদিও তৃণমূল নেতার বলছেন, রাজনীতিতে ধারনাটাই সর্বস্ব। সবাই জানেন অর্জুন সিং কী। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে হিংসা কার নেতৃত্বে হচ্ছে সবাই জানেন। তাঁদের কথায়, রাজ্যের এডিজি আইনশৃঙ্খলা জ্ঞানবন্ত সিং স্পষ্ট করে সাংবাদিক সম্মেলন করে মনোজ বর্মার পারদর্শীতাকে তারিফ করেছেন। একই সঙ্গে বলেছেন, ওই অঞ্চলে সমস্ত হিংসার নায়ক অর্জুন এবং তাঁর বিধায়কপুত্র পবন। বিজেপি যতই এটা নিয়ে দিল্লি-বম্বে করুক বিশেষ কিছু সুবিধা করতে পারবে না।