ভারতের পশ্চিম বাংলায় সুস্থ সাংস্কৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রথম একসঙ্গে ৫০০০ ভক্তের সমবেত কন্ঠে গীতা পাঠ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এত সংখ্যক লোক সম্মিলিতভাবে গীতা পাঠ করছেন যা সমগ্র ভারতবর্ষে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। গীতাকে ভারতের জাতীয় গ্রন্থ এবং স্কুলের পাঠ্যবইতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিও তোলা হয়েছে ইসকন মন্দির কর্তৃপক্ষ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে।
আজ সোমবার(৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টা থেকে মায়াপুর ইসকন মন্দিরে গোশালার পিছন দিকে ইসকনের উদ্যোগে পশ্চিম বঙ্গের সাড়ে তিন হাজার মঠ মিশনের সহযোগিতায় গীতা মঞ্চে বিশ্ব শান্তি যোগের মাধ্যমে সম্পন্ন হলো এই মহতী অনুষ্ঠান।
নদীয়া মায়াপুর ইসকন মন্দিরের গোশালার পিছন দিকে ফাঁকা ময়দানে ৭০ হাজার স্কয়ার ফিটের তৈরি এ মঞ্চ। চারপ্রান্তে চারটি মঞ্চে দেড়শ জন করে অতিথিরা বসবেন। মাঝখানে বিশাল প্যান্ডেলে বসবেন পাঁচ হাজার ছাত্রছাত্রী, মায়েরা, বোনেরা এবং গৃহস্থ মানুষজন।
শ্রীল প্রভুপাদ মঞ্চ, গীতা মঞ্চ, সারস্বত মঞ্চ এবং বসুধইব কুটুম্বকম মঞ্চ। এই চারটি মঞ্চের মাঝখানে তৈরি করা যজ্ঞকুন্ডের জন্য আরও একটি বিশেষ মঞ্চ। এই মঞ্চগুলিতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মত মন্দিরের স্বামী মহারাজেরা উপস্থিত ছিলেন। নজিরবিহীন এই সম্মিলিত গীতা পাঠে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ উপস্থিত হয়ে একসঙ্গে গীতা পাঠ করছেন।
গীতা মঞ্চে ছিলেন পশ্চিম বঙ্গের সমস্ত মঠ মিশনের সন্ন্যাসীরা। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ, জগতবন্ধু মঠ, মহানির্বাণ মঠ, মহাবিলাস মঠ, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন, রামকৃষ্ণ আশ্রম, বৈষ্ণব সমাজ সহ সমস্ত মঠ মিশনের সমস্ত সন্ন্যাসীরা বসেছিলেন এই গীতা মঞ্চে।
যজ্ঞকুণ্ডে ইসকনের গুরুকুলের ছাত্রছাত্রীরা ও মঠ মিশনের সন্ন্যাসী সমাজ এই মহাযজ্ঞের ঋত্তিক হয়েছিলেন।
প্রভূপাদ মঞ্চঃ পূর্ব প্রান্তে বিশাল মঞ্চ প্রভূপাদ মঞ্চ। সেখানে ইসকনের ব্রহ্মচারী ও সন্ন্যাসীরা বসছেন।
বসুধইব কুটুম্বকম মঞ্চঃ সারা পৃথিবীকে এক করার যে বাণী তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ভারতের প্রধান প্রধান সংগঠনের সর্বভারতীয় নেতারা ও কর্মকর্তারা বসবেন এই মঞ্চে।
সারস্বত মঞ্চঃ সারা ভারত বর্ষের সাংস্কৃতি রক্ষায় ও সংস্কৃতির ক্ষেতের যাদের অবদান রয়েছে এমন ১২০ জন অতিথি বসবেন।
মঞ্চের পাশে রাখা রয়েছে শৌচালয়ের ব্যবস্থাও। এছাড়াও ওই দিনে থাকবে সমস্ত রকম আপদকালীন ব্যবস্থাও। থাকছে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা৷ এছাড়াও থাকছে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থাও এবং যে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা সামাল দিতে প্রশাসনও ছিল তৎপর।
ইতিমধ্যেই ৫০০০ মানুষের সমবেত কণ্ঠে গীতা পাঠের জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। সারাপৃথিবীতে ইসকনের এই উদ্যোগ এবং সহযোগীতায় যারা আছেন অখিল ভারতীয় সংস্কৃত পরিষদ, সনাতন সংস্কৃতি সংসদ, রাষ্ট্রীয় সংহতি সহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান সার্থক হয়েছে।