স্ত্রীর সঙ্গে ‘অবৈধ সম্পর্ক’ রয়েছে! এমন সন্দেহ করে বাবাকে খুনের অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। কোচবিহারের শীতলখুচির জোড়াপাটকিতে ঘটনাটি ঘটেছে। রবিবার সকালে ষাটের কোঠার ওই বৃদ্ধের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিতকুমার বর্মা জানান, পড়শিদেরই অভিযোগ, ছেলে মিঠুন শীলই বাবা কাজল শীলকে খুন করেছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রীর সঙ্গে ‘সম্পর্ক’ নিয়ে বিগত কয়েক দিন ধরে বাবা ও ছেলের মধ্যে ঝামেলা লেগেই ছিল। শনিবারও গন্ডগোল হয় বাড়িতে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল গনির উপস্থিতিতে প্রতিবেশীদের ডেকে সালিশি সভাও বসে। এর পরেই রবিবার কাজলের দেহ উদ্ধার হয়। আব্দুল জানান, সকালে মিঠুনই তাঁকে ফোন করে বাবার ‘আত্মহত্যা’র খবর দেন। সেই খবর শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে ঘরে কাজলকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও।
আব্দুল বলেন, ‘‘শনিবার বিকেলে মিঠুনদের পরিবারে ঝামেলা হয়। মীমাংসার জন্য আমায় ডাকেন ওঁরা। পাড়া-প্রতিবেশীদের ডেকে নিয়ে গিয়ে ওঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসি আমি। মিঠুনের ধারণা হয়েছে, বাবার সঙ্গে স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। এই নিয়ে ওঁদের পরিবারে আগেও ঝামেলা হয়েছে। আমি ওঁদের এই ঝামেলা নিজেদের মধ্যে মিটমাট করে নেওয়ার পরামর্শ দিই। তার পরেই এই কাণ্ড!’’
মিঠুনের স্ত্রী জানান, তিনি মালদহের বাসিন্দা। সেখানে তাঁর বিয়েও হয়েছে। দুই সন্তানের মা তিনি। ৯ মাস আগে ওই সংসার ও সন্তানদের ছেড়ে মিঠুনের সঙ্গে শীতলখুচি পালিয়ে এসে সংসার পাতেন। মিঠুনের স্ত্রীও স্বীকার করেন, ‘‘মিঠুন মনে করত, শ্বশুরের সঙ্গে নাকি আমার সম্পর্ক রয়েছে!’’ শ্বশুর খুনে স্বামীর বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন স্ত্রীও। তিনি বলেন, ‘‘আমায় রাত ৩টে নাগাদ ডেকে তুলল ও (মিঠুন)। তুলে বলল, বাবাকে মেরে এসেছি!’’
কাজল খুনে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘কাজল শীল আত্মহত্যা করেছেন, এই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির উপর অত্যাচার করতেন ছেলে। ছেলের সন্দেহ ছিল, বাবার সঙ্গে স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’