শ্রমিকদের বর্ধিত বেতন বৃদ্ধির চাপে পড়ে দিঘার পাঁচটি বরফ কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হল বরফ কারখানাগুলির মালিক কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, দীঘার মোহনা থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ফতেপুর গ্রাম। এই গ্রামেই দীর্ঘ আঠারো থেকে কুড়ি বছর ধরে চলছিল এই বরফ কারখানা গুলি। এই কারখানা গুলি থেকেই বরফ যেত দীঘা মোহনা এবং শঙ্করপুরে।
বন্ধ হওয়া বরফ কারখানার মালিক পক্ষরা জানিয়েছেন, নাব্যতার ফলে বেশির ভাগ ট্রলার এখন আর শঙ্করপুরে ঢুকতে পারেনা। অন্যদিকে পেটুয়াঘাট মৎস্যবন্দর চালু হওয়ায় বর্তমানে বেশিরভাগ ট্রলারই শঙ্করপুরের বদলে পেটুয়াঘাট মৎস্যবন্দরের হাজির হচ্ছে। যার ফলে তাঁদের বরফের চাহিদাও অনেকটাই কমে গিয়েছে। অন্যদিকে বিদ্যুৎয়ের বিল অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় বরফের ব্যবসায় ক্ষতির মুখ দেখছিলেন তারা।
মালিকপক্ষ জানিয়েছেন, বর্তমান ব্যবসা ক্ষতিতে চলার পরেও কারখানার শ্রমিকেরা তাঁদের বেতন বৃদ্ধির দাবি জানাতে থাকে। একদিকে ব্যবসায় ক্ষতি অন্যদিকে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির চাপে বেশ কিছু দিন ধরে কারখানার মালিক এবং শ্রমিকপক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। যারফলে তারা একপ্রকার অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন বলে সূত্রের খবর।
শুধু তাই নয় মালিকপক্ষ আরও দাবি জানিয়ে বলেছে, বরফের যে কারখানা গুলি রয়েছে সেখানে শ্রমিকরা বছরে সাড়েসাত থেকে সাড়ে আটমাস কাজ করেন, তারপরেও তাঁদেরকে পুরো বারো মাসের বেতন দিতে হত। এমনকি পুজো এলে তাঁদেরকে পুজোর বোনাসও দিতে হত। শুধু তাই নয় গত বছর পুজোতে এইসব শ্রমিকদের পনেরো হাজার টাকা করে বোনাস দিতে হয়েছিল বলে দাবি করেন মালিক কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, এই বছর পুজোতে বোনাস আরও বাড়ানোর দাবি করেন শ্রমিকেরা।
সূত্রের খবর, দিঘার বরফ কারখানা গুলির বর্তমান সমস্যা গুলির ব্যাপারে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান এবং রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরিকে জানালেও এখনও পর্যন্ত এই সমস্যার কোনও সমাধান মেলেনি তাঁদের তরফ থেকে। মালিকপক্ষ বরফ কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার পড়ে এই আশু সমস্যার সমাধানে জেলাপরিষদের সভাপতি এবং জেলাশাসকের কাছে লিখিত আবেদনও জানিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, ঠিক পুজোর মুখে পাঁচটি বড়বড় কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে একদিকে যেমন সমস্যায় পড়েছেন শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবার গুলি। অন্যদিকে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও লাভ না হওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে বরফ কারখানার মালিকদের।