বিশ্বকাপে বেঁচে থাকল জার্মানির স্বপ্ন, স্পেনের বিরুদ্ধে লড়াই করে ড্র ন্যুয়েরদের

বিশ্বকাপে বেঁচে থাকল জার্মানি। গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে স্পেনের বিরুদ্ধে পিছিয়ে পড়েও ১-১ ড্র করল তারা। দ্বিতীয়ার্ধে আলভারো মোরাতা গোল করে স্পেনকে এগিয়ে দেন। সেই গোল শোধ করেন জার্মানির নিকলাস ফুলক্রুগ। জার্মানির কাছে অবশ্য আশার থেকে আশঙ্কা বেশি থাকল। এই ম্যাচে জিতলে অনেক বেশি স্বস্তিতে থাকতে পারতেন টমাস মুলাররা। ড্র করায় এক পয়েন্ট পাওয়া গেল বটে। কিন্তু অঙ্কের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে জার্মানিকে।

স্পেনের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে একাধিক বদল করেন জার্মানির কোচ হান্সি ফ্লিক। কাই হাভার্ৎজকে বসিয়ে দেন। ফলে স্ট্রাইকার হিসাবে খেলতে হয় শুধু টমাস মুলারকে। শুরু থেকেই অতি আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে স্পেন। তাদের খেলায় পাসের ফুলঝুরি দেখা যায়। পাল্টা আক্রমণ শানাতে থাকে জার্মানিও। এক বার গোল করার কাছাকাছি পৌঁছে যান লিয়ঁ গোরেৎজকা। তবে রিপ্লে-তে দেখা যায় সেটি অফসাইড ছিল।

খেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে স্পেনের আক্রমণ অল্প হলেও থিতিয়ে যায়। দু’দল পায়ে বেশি বল রাখার চেষ্টা করতে থাকে। পাস খেলে উপরের দিকে ওঠার চেষ্টা লক্ষ্য করা যায়। জার্মানি ভরসা রেখেছিল প্রতি আক্রমণের উপরেই। মাঝে এক বার সুযোগ পেয়েছিল তারা। স্পেনের ভুল ডিফেন্সের সুযোগ নিয়ে বক্সের ভেতর থেকে শট মারেন নাব্রি। গোলের বাইরে দিয়ে বল বেরিয়ে যায়। ন্যুয়েরের ভুল ক্লিয়ারেন্স থেকে সুযোগ পায় স্পেনও। কাজে লাগাতে পারেনি।

আচমকাই খেলাটা ছন্নছাড়া হয়ে যায়। অতিরিক্ত পাসিং ফুটবল খেলতে গিয়ে দু’দলই ভুল ভাল পাস খেলতে থাকে। স্পেনের ফেরান তোরেস এর মাঝেই গোলের একটা সুযোগ পান। বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। পারলেও অফসাইড হতেন। ৪০ মিনিটের মাথায় কিমিখের ফ্রিকিক থেকে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেছিলেন রুডিগার। উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করছিলেন। কিন্তু রেফারি জানিয়ে দেন, তিনি অফসাইড। এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করে জার্মানি।

বিরতির পর মনে করা হয়েছিল জার্মানির কোচ দলে বদল করবেন। কিন্তু তা হয়নি। স্পেনও অপরিবর্তিত দল নামায়। মুলার স্ট্রাইকার হিসাবে থাকলেও প্রথমার্ধে একটাও ভাল সুযোগ তৈরি করতে পারেননি। যত বার বল পেয়েছেন স্পেনের রক্ষণের কাছে তাঁর প্রচেষ্টা আটকে গিয়েছে। ৫৫ মিনিটের মাথায় হঠাৎ জার্মানি আক্রমণ করে। স্পেনের রক্ষণের ভুলে বক্সে উঠে এসেছিলেন জার্মানির ফুটবলাররা। জোশুয়া কিমিখের জোরালো শট বাঁচান উনাই সিমন।

এর পরেই এনরিকে দলে বদল করেন। আক্রমণে তোরেস কার্যকরী হতে পারছেন না দেখে তাঁকে তুলে নিয়ে মোরাতাকে বক্স স্ট্রাইকার হিসাবে নামান তিনি। সেই মোরাতাই গোল করে স্পেনকে এগিয়ে দেন ৬২ মিনিটে। জার্মানির রক্ষণের ভুলের সুযোগ নিয়ে গোল করেন তিনি। বাঁ দিকে বল পান জর্দি আলবা। তাঁর ক্রস থেকে চলতি বলে পা ঠেকিয়ে গোল করেন মোরাতা।

স্পেন গোল করার পরেই খেলাটা অনেক বেশি জীবন্ত হয়ে যায়। এত ক্ষণ দিশেহারা দেখালেও গোল হজম করার পর মরিয়া হয়ে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে জার্মানি। মাঝে এক বার গোলকিপারকে একা পেয়েও অকারণে জোরে শট মারতে গিয়ে তাঁরই গায়ে মারলেন মুসিয়ালা। সুবর্ণ সুযোগ হারায় জার্মানি। সেই মুসিয়ালাই সমতা ফেরানোর গোল এনে দিলেন একার কৃতিত্বে। যে ভাবে জার্মানি শেষ দিকে আক্রমণ করছিল তাতে গোল কোনও না কোনও সময়েই আসতই। সেটাই হল। ৮৩ মিনিটের মাথায় একার কৃতিত্বে স্পেনের ডিফেন্সকে ঘোল খাইয়ে বক্সের ভিতরে ঢুকে পড়েন মুসিয়ালা। তাঁর থেকে বল পেয়ে গোল করেন নিকলাস ফুলক্রুগ। পরে আরও কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল জার্মানি। কিন্তু স্পেনের ডিফেন্ডারদের তৎপরতায় গোল হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.