মেসিদের মরণ-বাঁচন ম্যাচ, রাত সাড়ে ১২টায় বিশ্বকাপে টিকে থাকার লক্ষ্যে নামছেন লিয়ো

রবিবার রাত ১২.৩০-এ মেক্সিকোর বিরুদ্ধে গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে নামছে আর্জেন্টিনা। লিয়োনেল মেসির কাছে এই ম্যাচ মরণ-বাঁচনের। প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হেরে গিয়ে যাবতীয় হিসাবনিকাশ ঘেঁটে গিয়েছে। গ্রুপের সবচেয়ে দুর্বল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জয়টাই স্বাভাবিক মনে করেছিলেন অনেকে। কারণ প্রতিপক্ষ হিসাবে মেক্সিকো এবং পোল্যান্ড অনেক শক্তিশালী। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই হেরে গিয়ে অঙ্ক কঠিন করে দিয়েছেন মেসিরা।

এমনিতেই এটা মেসির শেষ বিশ্বকাপ, সেখানে গ্রুপ পর্বেই বিদায় নেওয়ার মতো ‘উপহার’ মেসিদের দিতে চাইছেন না সতীর্থরা। দলের সেরা ফুটবলারের জন্যেই সেরা পারফরম্যান্স দিতে চান তাঁরা। আর কোনও ভুল করতে চান না।

পরিস্থিতি যা, তাতে শনিবার রাতে আর্জেন্টিনাকে জিততেই হবে। মেক্সিকোকে হারানো ছাড়া আর কোনও পথ খোলা নেই মেসিদের সামনে। এমন নয় যে ম্যাচ ড্র হলে আর্জেন্টিনা ছিটকে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে যেমন তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলের দিকে, তেমনই শেষ ম্যাচে পোল্যান্ডকে হারানোর প্রবল চাপ এসে পড়বে মেসিদের ঘাড়ের উপরে। গ্রুপে শক্তির বিচারে আর্জেন্টিনার পরেই রয়েছে পোল্যান্ড। রবার্ট লেয়নডস্কির দল যে খুব একটা খারাপ খেলছে তা বলা যাবে না। দলে একাধিক প্রতিভাবান ফুটবলার রয়েছেন। ফলে কাজ মোটেই সহজ হবে না।

জয়ে ফিরতে মেক্সিকো ম্যাচে প্রথম একাদশে একাধিক বদল করতে পারেন কোচ লিয়োনেল স্কালোনি। নিকোলাস ট্যাগলিয়াফিকো এবং পাপু গোমেজ় হয়তো প্রথম একাদশে সুযোগ পাবেন না। প্রথম ম্যাচে হারের পর রাতারাতি নিস্তব্ধতা নেমে এসেছে মেসিদের শিবিরে। হইহই করতে করতে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবিরে ঢুকেছিল দল। সঙ্গে নিয়ে এসেছিল ২৬০০ কেজি গোমাংস। সেই উৎফুল্ল পরিবেশ এখন অনেকটাই বদলে গিয়েছে। গোটা দলই অত্যন্ত সিরিয়াস। ঘনিষ্ঠ মহলে মেসি বলে দিয়েছেন, যে করেই হোক পরের পর্বে তাঁদের যেতে হবে। তার পর বাকি প্রতিযোগিতা নিয়ে ভাবা যাবে। আর কোনও ভুল করলে চলবে না।

মেক্সিকো ম্যাচের আগে ফরোয়ার্ড লাউতারো মার্তিনেস বলেছেন, ‘‘মেক্সিকোর বিরুদ্ধে ম্যাচটা আমাদের কাছে ফাইনালের মতো। কারণ এই ম্যাচের ফলাফলের উপর অনেকটাই নির্ভর করবে আমাদের বিশ্বকাপ ভবিষ্যৎ। অস্বীকার করার সুযোগ নেই প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হার আমাদের আত্মবিশ্বাসে কিছুটা হলেও ধাক্কা দিয়েছে। যদিও নিজেদের শক্তির উপর আস্থা রয়েছে আমাদের।’’

মেক্সিকোর বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট ছিনিয়ে নেওয়া কি সম্ভব এই পরিস্থিতিতে? মার্তিনেস বলেছেন, ‘‘আমরা ভুলগুলো শোধরাচ্ছি। মাথা ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করছি। অতীত নয় আগামী নিয়ে ভাবছি আমরা। মেক্সিকোর বিরুদ্ধে জয়ের ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী। আপাতত শুধু শনিবারের ম্যাচ নিয়েই ভাবছি সকলে।’’ মার্টিনেজ় মনে করেন, সৌদি আরবের বিরুদ্ধে হারার মতো খেলেননি তাঁরা। তাঁর যুক্তি, অফসাইডের জন্য তিনটি গোল পর পর বাতিল হওয়ায় দলের উপর চাপ তৈরি হয়ে।

পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিয়েছে মেক্সিকো। তাই গ্রুপ থেকে সব দলেরই পরের রাউন্ডে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মার্তিনেস বলেছেন, ‘‘আমরা যথেষ্ট আশাবাদী। ছোট কিছু ভুলের জন্য আমাদের প্রথম ম্যাচে হারতে হয়েছে। সেগুলো বার বার হবে না আশা করি। পরের প্রতিপক্ষের খেলা আমরা দেখেছি। ওদের শক্তি এবং দুর্বলতার জায়গাগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দলের সকলে লড়াইয়ের জন্য তৈরি।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.