সব্যসাচী চৌধুরী অসুস্থ। ঐন্দ্রিলা শর্মা চলে যাওয়ার পর তিনিও শয্যা নিয়েছেন—এই ধরনের নানা গুজব সমাজমাধ্যমে ছড়াচ্ছে। মনের মাধুরী মিশিয়ে নিজেদের আবেগের পূর্ণতা দিয়ে চলেছেন একাংশ। যেহেতু, ঐন্দ্রিলা অসুস্থ থাকাকালীনই নিজেকে নেটদুনিয়া থেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন সব্যসাচী, তাই তাঁকে নিয়ে গুজবে ইন্ধন দেওয়া সহজ হচ্ছে বলেই মনে করছেন অভিনেতা বন্ধু সৌরভ দাস। আগেও তাঁর মাধ্যমেই সব্যসাচীর খবর ভাগ করে নিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। এ বার সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে নিজে মধ্যরাতে ফেসবুক পোস্ট করলেন সৌরভ।
লিখলেন, ‘‘সব্যসাচী সুস্থ আছে। সঙ্গে আছি আমি এবং থাকব।’’
এর পর সবার উদ্দেশে জানালেন, যাঁরা ভুয়ো খবর রটাচ্ছেন, তাঁরা অসুস্থ, এতে বিব্রত না হতে।
শোক সামলে উঠতে না উঠতে এই ধরনের ঘটনায় তিনি যে ভীষণ রকম বিরক্ত তা-ও বুঝিয়ে দিলেন। লিখেছেন, গালিগালাজ দিয়ে পোস্টটি নোংরা করতে চাইছেন না, তাই দিচ্ছেন না। সব্যসাচী ভাল আছেন—সবাইকে শুধু এই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ সৌরভের।
পোস্টের শেষে ছিল সতর্কবার্তা। যদি ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়, সে ক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। সৌরভের অনুরোধ, ‘‘দয়া করে পরিবার পরিজনকে শান্তিতে থাকতে দিন।’’
টানা ১৯ দিনের লড়াই শেষে গত রবিবার বেলা ১২টা ৫৯ নাগাদ না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। রোগশয্যায় অতন্দ্র প্রহরীর মতো পাশে ছিলেন অভিনেত্রীর বন্ধু, সব্যসাচী। প্রিয়জনকে হারিয়েছেন সব্যসাচী। সকলের উৎকণ্ঠা, অভিনেতা কেমন আছেন?
সব্যসাচী সমাজমাধ্যম থেকে ঐন্দ্রিলা সংক্রান্ত সব পোস্ট মুছে বিদায় নেওয়ার পর, তাঁর খবর আগেও দিয়েছেন সৌরভ।
আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘‘সব্য ভেঙে পড়েছে। কেমনই বা থাকবে এই পরিস্থিতিতে! ঐন্দ্রিলার পরিবারও ভেঙে পড়েছে। তবে সব্যকে বলেছি, এক ফোঁটা চোখের জল না ফেলতে। আজ ওকে সামলাতে হবে ঐন্দ্রিলার পরিবারকে। সব্যসাচী ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে আর কখনও কিছু লিখবে না। কারণ মিষ্টির কথাতেই ও লিখতে শুরু করে। ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর ভাগ করে নিচ্ছিল সকলের সঙ্গে। যদি কেউ আশা করেন, ফেসবুকে কোনও পোস্ট দেবে সব্য, তা আর হবে না।’’
গুজবের বহরে এর পর আবারও মুখ খুলতে বাধ্য হলেন সৌরভ। অহেতুক উত্ত্যক্ত না করে শোকে মুহ্যমান পরিবারকে ব্যক্তিগত সময় দেওয়া উচিত বলেই তাঁর দাবি।
সালটা ২০১৭। ঐন্দ্রিলার প্রথম ধারাবাহিক ‘ঝুমুর’-এর সেটেই প্রথম দেখা সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলার। তবে সেই দেখাতেই যে তাঁরা পরস্পরকে মন দিয়ে ফেলেছিলেন, এমনটা নয়। ‘প্রথম দেখায় প্রেম’-এ মোটেও বিশ্বাসী ছিলেন না ঐন্দ্রিলা। তা হলে কী ভাবে শুরু হল রূপকথা? শুটিং থেকে ছুটি পেলেই বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে মিলে আড্ডা দিতেন ঐন্দ্রিলা। থাকতেন সব্যসাচীও। তার পর ধীরে ধীরে ফোনে কথাবার্তা শুরু। সেখান থেকে এগোয় তাঁদের সম্পর্ক। তার পর ৫ বছর বিভিন্ন চড়াই-উতরাই। কিন্তু শেষমেশ হাত ছাড়লেন ঐন্দ্রিলা। থেকে গেল তাঁদের রূপকথার আখ্যান।