১৭ কোটি টাকার সাপের বিষ উদ্ধার হিলি সীমান্তে, বিএসএফের হাত ফসকে পলাতক পাচারকারী

১৭ কোটি টাকা মূল্যের এক জার সাপের বিষ উদ্ধার করল বিএসএফ (BSF)। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলির ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কালীবাদি গ্রামের ঘটনায় শোরগোল। উদ্ধার জারভরতি সাপের বিষ (Snake poison) বৃহস্পতিবার বালুরঘাট বন বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিএসএফের দাবিমতো জারভরতি সাপের বিষ আইনানুসারে পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে বলে জানানো হয়েছে বন বিভাগের পক্ষ থেকে। তবে পলাতক সন্দেহভাজন পাচারকারী।

হিলির (Hili) বিভিন্ন সীমান্তকে করিডর করেই বারবার সাপের বিষ পাচারের ঘটনা সামনে আসছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। জানা গিয়েছে, ১৩৭ বিএসএফ-এর চকগোপাল বর্ডার আউটপোস্ট অন্তর্গত কালীবাদি এলাকা। রাতে ওই সীমান্তে প্রহরা চলাকালীন একটি কালভার্টের কাছে একজনকে দেখতে পায় বিএসএফ। সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে দেখে এগিয়ে যেতেই পালিয়ে যায় ওই সন্দেহভাজন। এরপরেই বিএসএফ লক্ষ্য করে, কালভার্টের নিচে একটি কালো প্লাস্টিকে মোড়া প্যাকেট। বুনো ঘাসে তা লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। প্লাস্টিক প্যাকেট খুলতেই উদ্ধার হয় একটি বিদেশি জার। জারটিতে “কোবরা এসপি রেড ড্রাগন, মেড ইন ফ্রান্স কোড নম্বর ৬০৯৭” চিহ্ন ছিল।

উদ্ধার হওয়ার ২ কেজি ১৪০ গ্রাম ওই বিষের আন্তর্জাতিক কালো বাজারে (Smuggling) মূল্য ১৭ কোটি টাকা বলে দাবি বিএসএফের৷ এই জার কাঁটাতারের ওপারে বাংলাদেশে চোরাচালানের জন্য আনা হয়েছিল বলে মনে করছে তারা। বিষটি কোবরার, প্রাথমিকভাবে এমনই জানাচ্ছে বিএসএফ। এদিন এই বিষের জার বালুরঘাট বন বিভাগের আধিকারিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এই বিভাগের ডেপুটি রেঞ্জার নিখিল ক্ষেত্রী জানান, ”এটি সাপের বিষ জানিয়ে আমাদের দিয়েছে। আমরা সেটি বাজেয়াপ্ত করলাম। পরীক্ষা না করা পর্যন্ত এ সম্পর্কে আমরা কিছু বলতে পারব না। এই জার আদালতের মাধ্যমে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠাব আমরা।”

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তিনদিক ঘেরা ভারত-বাংলাদেশ (India-Bangladesh) সীমান্ত। এই জেলাকেই করিডর হিসেবে ব্যবহার করতে দেখা যায় পাচারকারীদের। বালুরঘাট, হিলি, কুমারগঞ্জ ব্লকের বিভিন্ন সীমান্তকেই ব্যবহার করে তারা। বিগত ৬-৭ বছর ধরে এই সাপের বিষ উদ্ধারের ঘটনা সামনে আসছে। গত ১ সেপ্টেম্বর ৬১ বিএসএফ ব্যাটেলিয়ান ডিগিপাড়া বিওপি থেকে এক জার সাপের বিষ উদ্ধার করেছিল। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ছিল ১৭ কোটি ২ লক্ষ ৪৯ হাজার ৫২ টাকা। কখনও পাউডার, কখনও তরল আবার দানা আকারে জারের মধ্যে থাকছে এই বিষ। অধিকাংশ জারের গায়ে ‘মেড ইন ফ্রান্স’ লেখা থাকছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পাচারকারী বা অপরাধী পালিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.