ম্যাচের বয়স তখন ১০ মিনিটও হয়নি। হঠাৎই নিস্তব্ধ হয়ে গেল আল জানিয়ুব স্টেডিয়াম। এত ক্ষণ নীল জার্সিধারী যে সব সমর্থক নাচে গানে মাতিয়ে রেখেছিলেন, তাঁদের মধ্যে তখন শ্মশানের নিস্তব্ধতা। কারণ, একটু আগেই গোল করে এগিয়ে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আচমকা ফরাসি রক্ষণকে স্তব্ধ করে গোল করেছেন ক্রেগ গুডউইন। সঙ্গে সঙ্গে উঠতে শুরু করে প্রশ্ন, ফ্রান্সের অবস্থাও স্পেন, জার্মানির মতো হবে না তো? আগের বার বিশ্বকাপ জিতে পরের বার প্রথম রাউন্ডে বিদায়! ফ্রান্স নিজেও তো এক বার এই পরিস্থিতির ভুক্তভোগী।
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়। তবে বার বার নয়। এ বারও হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ অস্ট্রেলিয়ার যাবতীয় স্বপ্ন চুরমার করে দিয়ে ম্যাচে কিছু ক্ষণ পরেই ফিরে এল ফ্রান্স। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিল ৪-১ ব্যবধানে। বুঝিয়ে দিল, এ বারও ট্রফির দাবিদার তারা। সে যতই চোট পেয়ে করিম বেঞ্জেমা, পল পোগবা, এনকোলো কঁতে ছিটকে যান না কেন।
প্রতিযোগিতার পরের দিকে ফ্রান্স এই ছন্দ ধরে রাখতে পারবে কিনা সময়ই বলবে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ফ্রান্সের ভয়ঙ্কর চেহারাই দেখা গেল। শুরুতেই গোল খাওয়ার ধাক্কা সামলাতে একটু সময় লাগেই। ব্যস, ও টুকুই। ২৭ মিনিটেই গোল শোধ করে দিল দিদিয়ে দেশঁর দল। বাঁ দিক থেকে ক্রস করেছিলেন থিয়ো হের্নান্দেস। উড়ে গিয়ে হেড আন্দ্রে হাঁবিয়ের।
পাঁচ মিনিট পরে আবার গোল। এ বার অলিভিয়ের জিহু। করিম বেঞ্জেমা থাকলে হয়তো প্রথম একাদশে সুযোগই পেতেন না। এ দিন জোড়া গোল করে গেলেন। তাঁর প্রথম গোলের ক্ষেত্রে অবদান সেই হাঁবিয়ের। এ বার তিনি বাঁ দিক থেকে পাস দিলেন বক্সের মাঝখানে। অরক্ষিত অবস্থায় ছিলেন জিহু। ফাঁকা গোলে বল জড়াতে অসুবিধা হয়নি।
বিরতিতে ফ্রান্স ২-১ গোলে এগিয়ে থাকলেও চোখ ছিল এক জনের দিকেই। কিলিয়ান এমবাপে। গত বিশ্বকাপে আবির্ভাবেই মাতিয়ে দেন। এ বার কি প্রথম ম্যাচেই গোল পাবেন? হতাশ করলেন না ফরাসি ফরোয়ার্ড। গত কয়েক মাসে তাঁকে নিয়ে অনেক চর্চা হয়েছে। সে সবের জবাব দিলেন মাঠেই। ৬৮ মিনিটের মাথায় ডান দিক থেকে বল ভাসিয়েছিলেন ওসমানে দেম্বেলে। লাফিয়ে হেডে গোল এমবাপের। তিন মিনিট পরে তিন গোল করালেন। অসাধারণ সোলো রানে বল ভাসিয়েছিলেন বক্সে। হেডে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের চতুর্থ গোল জিহুর। ফ্রান্সের হয়ে যুগ্ম সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেন জিহু। ৫১ গোল করে ছুঁয়ে ফেললেন থিয়েরি অঁরিকে।