কোনও পরীক্ষা দিয়ে পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্রের কার্বন কপি সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন, এমন অভিনব দৃশ্য দেখা যাবে ১১ ডিসেম্বর প্রাথমিক টেটের পরে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল মঙ্গলবার বলেন, “প্রার্থী যে-ওএমআর শিটে পরীক্ষা দেবেন, তার একটা কার্বন কপি নিয়ে যেতে পারবেন। টেটে এই ধরনের ব্যবস্থা আগে কখনও হয়নি।” স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় আগেকার বিভিন্ন টেটে নম্বর নিয়ে কারচুপির অভিযোগ একটি বড় প্রসঙ্গ। প্রার্থীকে উত্তরপত্রের প্রতিলিপি বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিলে ক’টি উত্তর ঠিক হয়েছে, কত নম্বর পেতে পারেন, সেটা তিনি নিজেই যাচাই করে নিতে পারবেন বলে শিক্ষা শিবিরের ব্যাখ্যা।
পর্ষদ-সভাপতি জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রধান বা পরিদর্শকেরা আর ওএমআর শিট এবং প্রশ্নের সিল করা প্যাকেট খুলবেন না। পরীক্ষার্থীরাই তা খুলে নেবেন। এই প্রথম কোনও বেসরকারি ডিএলএড কলেজে টেট হচ্ছে না। পরীক্ষা হবে সরকারি ডিএলএড কলেজ, সরকারি স্কুল ও কলেজে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের মতো টেটে যাতে স্পর্শকাতর কেন্দ্রের আশেপাশে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়, শিক্ষা দফতরের কাছে সেই প্রস্তাব পাঠিয়েছে পর্ষদ। সর্বোপরি তাদের প্রস্তাব, বিভিন্ন স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্রে ১৪৪ ধারা জারি করে টেট নেওয়া হোক।
পর্ষদ জানিয়েছে, পরীক্ষার্থী বা পর্যবেক্ষকেরা মোবাইল নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না। ঘড়িও পরতে পারবেন না প্রার্থীরা। সব ঘরে ঘড়ি থাকবে। নির্বিঘ্নে টেট সম্পন্ন করার জন্য জেলাশাসক অথবা মহকুমাশাসককে মাথায় রেখে সর্বত্র জেলাভিত্তিক কমিটি গড়া হবে। রাজ্য জুড়ে প্রায় ১৫০০ কেন্দ্রে টেট দেবেন ছ’লক্ষ ৯০ হাজারের কিছু বেশি প্রার্থী। গৌতম বলেন, “অল্প সময়ে এমন গুরুত্বপূর্ণ চাকরির পরীক্ষা স্বচ্ছ ভাবে করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’
পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষা দফতর একটি ১৬ দফা ‘গাইডলাইন’ বা নির্দেশিকা সব জেলায় পাঠাচ্ছে। পর্ষদ জানায়, প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৩০০-র কিছু বেশি প্রার্থীর বসবেন। প্রতিটি কেন্দ্রে এক বা দু’জন পর্যবেক্ষক থাকবেন। পর্ষদের উপসচিব পার্থ কর্মকার বলেন, “পর্যবেক্ষক হিসেবেথাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। যে-স্কুল, কলেজ বা ডিএলএড কলেজে পরীক্ষা হবে, সেখানকার প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষ হবেন সেন্টার ইনচার্জ। প্রতিটি কেন্দ্রে এক জন সরকারি অফিসারও ইনচার্জ হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।”