দিল্লির শ্রদ্ধা ওয়ালকর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বেশ সাদৃশ্য রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তীকে খুনের ঘটনার। শ্রদ্ধাকে খুন করে ৩৫ টুকরো করেছিলেন তাঁর প্রেমিক আফতাব পুনাওয়ালা। প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী উজ্জ্বলকেও খুন করে ছয় টুকরো করেছিল তাঁর স্ত্রী শ্যামলী চক্রবর্তী এবং ছেলে জয়। পুলিশ সূত্রে এমনই খবর। শ্যামলী এবং জয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, আফতাবের ‘কীর্তি’ দেখে ‘অনুপ্রাণিত’ হয়েছিলেন তাঁরা। তাই উজ্জ্বলকে খুন করে দেহ তাঁরা টুকরো টুকরো করে ফেলে দিয়েছিলেন বাড়ির কাছাকাছি জলাশয়-সহ বিভিন্ন এলাকায়। রবিবার জয়কে নিয়ে বারুইপুরের ওই এলাকায় তল্লাশি চালায় পুলিশ।
জেরায় জয় এবং শ্যামলী জানিয়েছেন, তাঁরা উজ্জ্বলকে শ্বাসরোধ খুন করে ছয় টুকরো করে ফেলেছিল। এমনটাই দাবি পুলিশের। তদন্তকারীদের দাবি, উজ্জ্বলের বাড়িতে সম্প্রতি কাঠের কাজ হয়েছিল। সেই কাজে ব্যবহৃত করাত দিয়ে উজ্জ্বলের দেহ কাটে জয়। তাঁকে সাহায্য করে উজ্জ্বলের স্ত্রী শ্যামলী। শৌচাগারে রাত সাড়ে ৯টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত বাবার দেহ টুকরো টুকরো করে জয়। এর পর ওই দেহাংশগুলি ফেলে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়। বারুইপুরে উজ্জ্বলের বাড়ির কাছাকাছি একটু পুকুর থেকে তাঁর দেহের কিছু অংশ পেয়েছে পুলিশ। সেই পুকুরে রবিবার স্থানীয় দু’জনকে নামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশি চালানো হয় আশপাশের জঙ্গলেও। সেখানে কোমরের কিছুটা অংশ পাওয়া যায়। তবে উজ্জ্বলের দুই হাত এখনও পাওয়া যায়নি।
যে করাত দিয়ে বাবার দেহ কেটেছিলেন জয়, সেটার সন্ধানও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। বাড়ির কাছে এমন হাড়হিম করা ঘটনার কথা শুনে স্তম্ভিত স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু কেন এমন কাণ্ড? স্বামীকে খুনে অভিযুক্ত উজ্জ্বলের স্ত্রী শ্যামলী পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীনই বলেন, ‘‘উনি নেশা করতেন, অত্যাচার করতেন খুব। মারধর করতেন।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই জঙ্গলে শেয়াল রয়েছে। ফলে দেহাংশ ফেললে তা শেয়াল খেয়ে ফেলার আশঙ্কাও রয়েছে।