এক দিকে যখন কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু হতে চলেছে, অন্য দিকে তখন ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ ভারতীয় ফুটবলে। তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। দেশের পাঁচটি ক্লাব তাদের নজরে রয়েছে।
সিবিআই সূত্রে খবর, সিঙ্গাপুরের উইলসন রাজ পেরুমল এই গড়াপেটার কেন্দ্রে। তিনি আগেও আন্তর্জাতিক স্তরে ম্যাচ গড়াপেটা করেছেন। অলিম্পিক্স, বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচ, মহিলাদের বিশ্বকাপ, কনকাকাফ গোল্ড কাপ ও আফ্রিকান কাপ অফ নেশনসে তিনি গড়াপেটা করেছেন বলে অভিযোগ। ১৯৯৫ সালে সিঙ্গাপুরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে ফিনল্যান্ড ও হাঙ্গেরিতেও গ্রেফতার হয়েছিলেন উইলসন। কিন্তু এখনও তাঁর কারবার চলছে। একাধিক ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে ভারতীয় ফুটবলে তিনি ম্যাচ গড়াপেটা করেছেন বলে অভিযোগ।
গত সপ্তাহে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার (এআইএফএফ) প্রধান কার্যালয়ে হানা দিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। সেখানে গিয়ে তাঁরা অভিযুক্ত ক্লাবগুলির আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখেন। এআইএফএফ-এর সচিব শাজি প্রভাকরণ বলেছেন, ‘‘ম্যাচ গড়াপেটার ক্ষেত্রে ফেডারেশন খুব কড়া। সংশ্লিষ্ট ক্লাবগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তদন্তে সহযোগিতা করতে। শোনা যাচ্ছে, ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন হয়েছে। ভারতীয় ফুটবলের যাতে গড়াপেটার কালো ছায়া না পড়ে তার জন্য সব পদক্ষেপ করবে ফেডারেশন।’’
সিবিআই ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত ক্লাবগুলিকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, তাদের বিনিয়োগ সংক্রান্ত সব তথ্য জমা দিতে। কোন পাঁচ ক্লাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে জানা গিয়েছে, পাঁচটি ক্লাবই আইলিগের। তার মধ্যে ইন্ডিয়ান অ্যারোজ়ও রয়েছে। ভারতের তরুণ ফুটবলারদের নিয়ে এই ক্লাব তৈরি করেছিল ফেডারেশন। তারাও আতসকাচের তলায়। কোভিডের কারণে গত দুই মরসুম জুড়ে আইলিগের সব ম্যাচ পশ্চিমবঙ্গে হচ্ছে। জৈবদূর্গের মধ্যে রয়েছেন ফুটবলাররা। তার মধ্যে কী ভাবে গড়াপেটা হল তা ভেবে পাচ্ছে না ফেডারেশন।
অ্যারোজ়ের নাম গড়াপেটায় জড়িয়ে পড়ায় চিন্তায় এআইএফএফ। ফেডারেশনের আর এক আধিকারিক বলেছেন, ‘‘আমরা জানি না অ্যারোজ় কী ভাবে এর মধ্যে জড়িয়ে পড়ল। এআইএফএফ ও ওড়িশা সরকারের আর্থিক সাহায্যে এই ক্লাব চলে। দলে কোনও বিদেশি ফুটবলার নেওয়া হয় না। মনে হয় দলের সঙ্গে যুক্ত কোনও ব্যক্তি এই কাজ করে থাকতে পারে।’’
চলতি বছরই গড়াপেটার অভিযোগ উঠেছে গোয়া প্রো লিগে। ১৫ থেকে ২৪ মার্চের মধ্যে লিগের ছ’টি ম্যাচে গড়াপেটার অভিযোগ উঠেছিল। তার ফলে অন্যান্য রাজ্যের লিগের দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।