গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডলকে এ বার গ্রেফতার করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বুধবার আসানসোল সংশোধনাগারে গিয়ে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করলেন কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরা।
ইডি সূত্রে খবর, তৃণমূল নেতাকে ‘সোন অ্যারেস্ট’ করা হয়েছে। যার অর্থ, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে আদালতে হাজির করাতে হবে। তদন্তকারীদের একটি সূত্র জানায়, গরু পাচার মামলায় লেনদেন সংক্রান্ত বেশ কিছু বিষয় নিয়ে অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু কোনও প্রশ্নেরই যথোপযুক্ত জবাব দেননি তিনি। তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগেই অনুব্রতকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি ওই ইডি সূত্রের।
গরু পাচার মামলায় গত অগস্ট মাসে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার অনেক আগে সিবিআইয়ের হাতেই গ্রেফতার হয়েছিলেন তাঁর দেহরক্ষী সহগল হোসেন। তিনিও আসানসোল সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন। ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি সহগলকেও একই ভাবেই ‘সোন অ্যারেস্ট’ করে দিল্লি নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন ইডির তদন্তকারীরা। শেষ পর্যন্ত তাঁকে দিল্লি নিয়েও যাওয়া হয়। এ বার ইডির হাতে অনুব্রতের গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় অনেকেই মনে করছেন, তৃণমূল নেতাকেও দিল্লি নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে ইডি। শুধু তা-ই নয়, সেখানে অনুব্রত এবং সহগলকে মুখোমুখি বসিয়েও জেরা করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইডি সূত্রে দাবি, যে হেতু অনুব্রতকে আদালতে হাজির করানোর সময়সীমা ২৪ ঘণ্টা, তাই তাঁকে আসানসোলের আদালতেই হাজির করানো হতে পারে। সেখানে অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করতে পারেন তদন্তকারী সংস্থা আইনজীবী। সহগলের ক্ষেত্রে ঠিক যে রকম ঘটেছিল। তদন্তকারীদের সূত্রের আরও দাবি, সিবিআইয়ের হাতে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর নামে-বেনামে বহু সম্পত্তির হদিস মিলেছে। মূলত সেই সম্পত্তির উৎস নিয়ে জেরা করা হবে অনুব্রতকে।
এ ছাড়াও, তদন্তকারীদের দাবি, গরু পাচারের মুনাফার অর্থের অনেক হাত বদল হয়েছে। সেই টাকা কী ভাবে এক হাত থেকে অন্য হাতে গিয়েছে, কার কার কাছে ওই টাকা গিয়েছে, সেই ব্যাপারেও তৃণমূল নেতাকে প্রশ্ন করা হতে পারে বলে দাবি ইডি সূত্রের।