আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রোহিঙ্গা নয়, বেছে বেছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া হিন্দু শরনার্থীদের ফিরিয়ে নেবে মায়ানমার।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে বিবিসি বাংলা।
মিয়ানমারের অসহযোগীতায় দুই দফা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনর চেষ্টা ভেস্তে যায়।
দ্বিতীয় প্রচেষ্টাটি ছিলো গত ২২ আগস্ট। সেটি ব্যর্থ হওয়ার পর বেশ কয়েকদিন ধরে নীরব রয়েছে সীমান্ত এলাকা।
ওইদিন বাংলাদেশ থেকে ৩৪৫০ জন রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছিলো মিয়ানমার সরকার।
কিন্তু রোহিঙ্গা শরণার্থীরা নাগরিক অধিকার ছাড়া সেখানে যেতে অস্বীকার করায় দুই দেশের সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।
বিবিসি বাংলা জানাচ্ছে, ফের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে তৎপর হয়েছে মিয়ানমার। তবে মুসলিম নয়, তারা কেবল টেকনাফের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় থাকা কয়েকশ হিন্দু শরণার্থীকে ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছুক।
এদিকে শরণার্থী প্রত্যাবাসনের দ্বিতীয় প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার জন্য বাংলাদেশকে দুষছে মিয়ানমার সরকার।
এ নিয়ে জন্য বিবিসি বার্মিজ বিভাগের সম্পাদক সো উইন থান বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার মনে করছে, প্রত্যাবাসন না হওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ব্যর্থতা আছে। কারণ তাদের ফেরত পাঠানোর দায়িত্ব ছিলো বাংলাদেশের।
মিয়ানমার সরকার বলছে, তারা ফেরত নেয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলো। কিন্তু সেদিন একজনও ওপার থেকে আসেনি। তবে আমরা জানতে পেরেছি, মিয়ানমার সরকার এখন বাস্তুচ্যুত হিন্দুদের ফেরত আনা নিয়ে কাজ করছে।’
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে মিয়ানমার সরকার হিন্দু শরণার্থীদের ফেরত নিতে হঠাৎ আগ্রহী হয়ে উঠেছে কেন?
এই প্রশ্নের জবাবে উইন থান জানান, মুসলিম রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ফিরতে ইচ্ছুক না হলেও হিন্দু শরণার্থীরা স্বেচ্ছায় ফিরতে চায়। আর মিয়ানমার সরকারও চায় প্রত্যাবাসন শুরু করতে।
উইন থান আরো নিশ্চিত করেছেন, গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারে আসা জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূতকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
এদিকে, একই দিনে অন্য এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের গ্রামগুলি ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে মিয়ানমার সরকার। সেখানে স্থাপন করা হয়েছে পুলিশ ব্যারাক, বিভিন্ন সরকারি ভবন এবং শরণার্থী শিবির।
সম্প্রতি মিয়ানমারে এক সরকারি সফর শেষে এই খবর জানিয়েছেন বিবিসি’র দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া বিষয়ক প্রতিনিধি।
ওই প্রতিনিধি জানান, একসময় রোহিঙ্গা জনবসতি ছিল স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা এমন চারটি এলাকায় সুরক্ষিত স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ওই বিবিসি প্রতিনিধি।