শ্রদ্ধা-আফতাবের ফ্ল্যাটের রান্নাঘরে রক্তের দাগ! সেই রক্ত কার? শ্রদ্ধার নয় তো? রাজধানীতে রহস্যে মোড়া হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে ওই রক্তই দিল্লি পুলিশের নজরে। এ দিকে শ্রদ্ধার দেহাংশের খোঁজে এখনও জারি রয়েছে জঙ্গলে তল্লাশি। ছতরপুরের জঙ্গলে তল্লাশি চালাতে গিয়ে পুলিশের হাতে এসেছে অন্তত ১৩টি হাড়ের টুকরো। সেগুলি যে মানুষেরই তা নিশ্চিত হওয়া গেলেও, শ্রদ্ধারই কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। হাড়ের টুকরোগুলো পাঠানো হয়েছে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য। তার পরেই পরিষ্কার হবে, ছতরপুরের জঙ্গলে মেলা হাড়ের টুকরো শ্রদ্ধা ওয়ালকরের কি না।
রাজধানী দিল্লিতে শ্রদ্ধা ওয়ালকর হত্যাকাণ্ডের পরতে পরতে রহস্যের ঘনঘটা। লিভ-ইন সঙ্গী আফতাব আমিন পুনাওয়ালা ঠান্ডা মাথায় খুন করেন শ্রদ্ধাকে। তার পর শ্রদ্ধার দেহকে করাত দিয়ে অন্তত ৩৫টি খণ্ডে কেটে ঢুকিয়ে রাখেন ফ্রিজে। দিনের পর দিন, একটি একটি করে দেহাংশের টুকরো জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসতেন তিনি, প্রাথমিক তদন্তের পর এমনই মনে করছে দিল্লি পুলিশ। এখনও পাওয়া যায়নি সেই করাতটি। কিন্তু তাঁদের রান্নাঘরে পাওয়া গিয়েছে রক্তের দাগ।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, আফতাব জেরার মুখে ভেঙে পড়েছেন। কাঁদতে কাঁদতে স্বীকার করেছেন, তিনিই শ্রদ্ধাকে খুন করেছেন। কিন্তু পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দি আদালতে গ্রাহ্য হবে না। তাই পুলিশকে আরও আঁটঘাট বেঁধে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক বলছেন, ‘‘মঙ্গলবার নতুন করে শ্রদ্ধা ওয়ালকরের দেহাংশ উদ্ধার হয়নি। এখনও পাওয়া যায়নি করাতটিও। আমাদের দলের একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, যে ১৩টি হাড়ের টুকরো পাওয়া গিয়েছে, তা মানুষেরই। কিন্তু সেগুলো শ্রদ্ধারই কিনা তা জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষা করতে হবে। আমরা সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছি। রিপোর্ট এলে গোটা ব্যাপারটি পরিষ্কার হবে।’’
ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের সূত্রে জানা গিয়েছে, দম্পতির ছতরপুরের ফ্ল্যাটের রান্নাঘরে সিঙ্কের কাছের কাঠের ক্যাবিনেটে শুকিয়ে যাওয়া রক্তের কিছু দাগ পাওয়া গিয়েছে। সেই রক্ত কি শ্রদ্ধার? নমুনা সংগ্রহ করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে। সিঙ্কের পাশের মার্বেলের উপরেও রক্তের দাগ দেখতে পেয়েছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। সবই সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, জঙ্গল থেকে হাড়ের যে টুকরোগুলো পাওয়া গিয়েছে তা মূলত পাঁজর এবং কোমরের নীচের অংশের বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।