সিনেমাহলে প্রথম কোনো দক্ষিণী সিনেমার মুখোমুখি। ধারণাটাই বদলে গেলো। আপনি এক মূহুর্তের জন্যও বুঝবেন না যে সিনেমাটা প্রায় আড়াই ঘন্টার। সিনেমাটোগ্রাফি, গল্পের বাঁক, ক্যামেরা, সংলাপ (হিন্দি ডাবিং) সব মিলে এক দুর্দান্ত সময় অতিবাহিত।

সনাতন ধর্মের একটা বড় ঐতিহ্য হলো প্রকৃতিকে সঙ্গে নিয়ে চলা। কান্তারার প্রতিটা মুহূর্ত এটাকেই জীবন্ত করে তুলেছে। জঙ্গলে অধিষ্টিত দৈব শক্তি আর তার সাথে একশ্রেণীর মানুষের দাবীর টানাপোড়েন নিয়ে এ গল্প। আপনি যদি বিস্মৃত বাঙালি না হন, তা হলে এ গল্পের অংশবিশেষ পারিবারিক ধারায় সন্তানের ফিরে আসার গল্পও মনে হতে পারে। বা কখনও মনে হবে আধুনিক মূল্যবোধ-আগ্রাসনের সঙ্গে সনাতনী বিশ্বাসের লড়াই। সিনেমার সময়কাল এক শতকের ওপর। শুরু এক বিত্তশালী জমিদারের দৈব আশীর্বাদপ্রাপ্তির বিনিময়ে জমিজমা বিলিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। আর শতাব্দী পরে শেষ সেই প্রতিশ্রুতি ভেঙ্গে যাওয়ার মূহুর্তে রক্ত মাংসের মানুষকে দিয়েই প্রকৃতি দেবতার অধিকার পুন:প্রতিষ্ঠা। কথা দিলে যে কথা রাখতেই হয়।

সিনেমাটা কেনো বলিউডের থেকে আলাদা? হিন্দু দেশজ দেবদেবীদের নিয়ে শেষ কবে এরকম সিনেমা মুম্বাইয়ের খান পরিবার ও তার লবি বানিয়েছে তা বোধহয় ভুলেই গেছি। তাও আবার ভিলেনের ভূমিকায় খানকতক শান্তি বাহিনীর প্রতিনিধি, আর নায়কের নাম শিবা!

হলভর্তি দর্শক। তবুও মনে হলো এখনো বোধহয় গড়পরতা বাঙালি বক্স অফিসে ভীড় জমায় নি। দেখে আসুন। এক অবিমিশ্র নিখাদ ভালোলাগায় আপনিও সম্পৃক্ত হবেন।

———————-

ড: অরিন্দম সাহা
৮ নভেম্বর ২০২২

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.