দ্য কেরালা স্টোরি

দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এ কাশ্মীরি পন্ডিতদের গনহত্যার চিত্র বর্নিত হয়েছিল । সেই সমস্ত নৃশংস, বর্বরোচিত ঘটনা রূপালি পর্দায় দেখার পর যে কোনো সংবেদনশীল মানুষই চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি । এবার কেরালায় সন্ত্রাসবাদের ফাঁদে পরা মেয়েদের শেষ পরিনতি নিয়ে নিয়ে নতুন একটি ছবি নির্মিত হয়েছে, যার নাম ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ । গত ৩ নভেম্বর ছবিটির টিজার প্রকাশিত হয়েছে ।
সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ‘দ্য কেরালা স্টোরি’তে ওই সমস্ত মহিলাদের মর্মস্পর্শী পরিনতির কাহিনী তুলে ধরেছেন পরিচালক সুদীপ্ত সেন এবং প্রযোজক বিপুল অমৃতলাল শাহ ।
বলা হচ্ছে,গল্পটিকে বড় পর্দায় উপস্থাপন করার আগে পরিচালক সুদীপ্ত সেন বেশ কিছু আরব দেশ সহ গোটা কেরালা পরিদর্শন করেছিলেন, স্থানীয় বাসিন্দা এবং নিহত মহিলাদের আত্মীয়দের সাথে কথা বলেছেন । আর তিনি যা দেখেছিলেন তা শিউরে ওঠার মত ।

ঈশ্বরের স্থান বলে পরিচিত কেরল থেকে কীভাবে মেয়েদের বিদেশে পাচার করা হয়। ভারতের এই রাজ্য থেকে ধারাবাহিকভাবে মেয়েদের অপহরণ ও পাচার করা হচ্ছে আইএসআইএস-অধ্যুষিত দেশগুলোতে।

সম্প্রতি এক সমীক্ষায় জানা গেছে, ২০০৯ থেকে ক্রমাগত প্রায় ৩২,০০০ হিন্দু ও খ্রিস্টান মেয়েদের ইসলামীকরণ করে সিরিয়া, আফগানিস্তান এবং আইএসআইএস ও হাক্কানি-অধ্যুষিত দেশে পাচার করা হয়েছে। এই আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কেরল সরকারের কোনও অ্যাকশন প্ল্যান নেই। এই উপমহাদেশের মধ্যে কেরল মেয়ে পাচারে শীর্ষে।

এইসব মেয়েদের মায়েদের তাদের চোখের জল দেখেছি। অনেকেই সিরিয়া বা আফগানিস্তানের জেলে বন্দি। তাদের বিচারও হয়নি। অনেকে সন্ত্রাসবাদীদের বিয়ে করে, তাদের সন্তানের জন্ম দিতে বাধ্য হয়েছে। এরা নরকের জীবন কাটাচ্ছেন , এদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

৩২ হাজার মহিলা স্রেফ উধাও। কোনও খোঁজ নেই। দশ, কুড়ি, পঞ্চাশ জন নয়, ৩২ হাজার। পাকিস্তান, বাংলাদেশ নয়, এ দেশের কেরলের ঘটনা। সেই নিয়েই সিনেমা তৈরি করেছেন পরিচালক সুদীপ্ত সেন। নাম ‘দ্য কেরালা স্টোরি’।

চার বছর ধরে কেরলের অলি গলি ঘুরেছেন পরিচালক। কথা বলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিখোঁজ এবং নিহত মেয়েদের পরিবারের। জানতে পেরেছেন, ২০০৯ থেকে কেরল এবং ম্যাঙ্গালোর থেকে প্রচুর হিন্দু ও খ্রিস্টান নারীকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য করা হয়েছে। এবার সেসব পর্দায় ফুটিয়ে তুলছেন সুদীপ্ত।

বৃহস্পতিবার মুক্তি পেয়েছে দ্য কেরালা স্টরি-র টিজার। দেখানো হয়েছে, নার্স হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে যে মেয়েটির বাড়ির বাইরে পা রেখেছিল। তাকে কিভাবে অপহরণ করা হয়েছে। এখন সে আইসিস জঙ্গি। আফগানিস্তানের কারাগারে বন্দি। এই ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আদাহ শর্মা।

ছবি তৈরি করতে গিয়ে পরিচালক জেনেছেন এত সংখ্যক মহিলাকে স্রেফ তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে কেউ জানে না। শোনা যাচ্ছে, সিরিয়া আফগানিস্তানে তাদের রাখা হয়েছে। সেখানে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। তারপর বানানো হয়েছে আইসিস জঙ্গি। এই ছবিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে বছরের পর বছর ধরে এই ঘটনা ঘটছে, অথচ কেরল সরকার কি জেগে ঘুমোচ্ছে?

ছবি সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিপুল এর আগে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘নিখোঁজ মেয়েদের জীবন কাহিনী শুনতে শুনতে কেঁদে ফেলেছিলাম। কত স্বপ্ন নিয়ে মেয়েরা কাউকে বিশ্বাস করে, আর সেই বিশ্বাস ভাঙতে বিশ্বাসঘাতকদের একটুও সময় লাগে না’। নতুন বছরে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।

https://fb.watch/gGbeZ4oOF-/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.