কেউ ভুগছেন শ্বাসকষ্টে, কারও চোখ জ্বালা ভাব, দিল্লির দূষণে ক্রমশ বাড়ছে রোগীর সংখ্যা

দিল্লির বাতাসে বিষ! পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দূষণের মাত্রা। পরিস্থিতি এতটাই ‘ভয়াবহ’ যে, শ্বাস নেওয়াই দায়! বায়ুদূষণের দাপাদাপিতে দিল্লির অনেক বাসিন্দাই অসুস্থ বোধ করছেন। অনেকেই শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বলে দাবি করেছেন। আবার কারও চোখজ্বালা ভাব রয়েছে। কারও কাশি-হাঁচি থামছেই না। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে।

সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, দীপাবলির পর থেকে দিল্লিতে এই ধরনের উপসর্গ নিয়ে বহু রোগী হাসপাতালে ভিড় করছেন। যত দিন গড়াচ্ছে, ততই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার দিল্লির লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীদের লম্বা লাইনের ছবি দেখা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, অধিকাংশ রোগী শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। কেউ দাবি করেছেন, অনেক দিন ধরে কাশি, হাঁচি হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, শিশু ও বয়স্করা তুলনামূলক ভাবে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

ফতিমা রহমান নামে দিল্লির এক বাসিন্দা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন যে, তাঁর ছয় বছরের সন্তানের গলাব্যথা। সঙ্গে কাশিও রয়েছে। সন্তানের অসুস্থতা না সারায় নিকটবর্তী হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে ভিড় থাকায় লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালে যান। কিন্তু সেখানেও রোগীদের ভিড়। আর্থ্রাইটিসে ভোগা ৬০ বছরের কমলা দেবীও অসুস্থ বোধ করেছেন। তাঁর বুকে সংক্রমণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ওই বৃদ্ধাও ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দূষণের জেরেই অধিকাংশ মানুষ অসুস্থ বোধ করছেন। সে কারণে বাড়ির বাইরে না যাওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। বিশেষত সকালের দিকে বাড়ির বাইরে না বেরোনই ভাল বলে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরাও। সেই সঙ্গে রোজ বেশি করে শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, দিল্লিতে দূষণের জেরে বাতাসের গুণমান কার্যত তলানিকে ঠেকেছে। শনিবার সকালে রাজধানীর বাতাসের গুণমান সূচক ছিল ৪৩১। যা ‘ভয়াবহ’ বলেই বর্ণনা করা হয়েছে। দিল্লিবাসীর পক্ষে এই বাতাস শ্বাস নেওয়ার উপযোগী নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত বৃহস্পতিবার দিল্লি-এনসিআরে বায়ুর গুণমান খারাপ হওয়ার প্রেক্ষিতে চারস্তরীয় ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘দ্য কমিশন অফ এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট’। একাধিক গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি শনিবার থেকে সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.